অধিকার ডেস্ক ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:২২
কনুইয়ের চোটে আক্রান্ত ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী ম্যাচ, এবি ডি ভিলিয়ার্সের অভিষেক। উত্তেজনার পারদ চূড়ায় উঠবার মতো সব রসদই ছিল স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স ও রংপুর রাইডার্সের মধ্যকার ম্যাচে। হিসাব মতো রঙও ছড়াল মাঠের লড়াই। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে ৩ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিল রংপুর।
শনিবার বিপিএলে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেট সিক্সার্সের করা ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৫ রান তুলে জয় নিশ্চিত করল রংপুর রাইডার্স। টানা ৩ ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরলেন আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মাশরাফি বিন মর্তুজারা। অন্যদিকে গেল বুধবার রংপুরকে ২৭ রানে হারানো ওয়ার্নারের সিলেট পেল টানা ২ হারের স্বাদ।
বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল রংপুর। এর আগে ২০১৩ সালে তাদের বিপক্ষেই ১৯৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে জিতেছিল পুরনো মালিকানায় থাকা সিলেট রয়্যালস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ক্রিস গেইলের উইকেট হারায় রংপুর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রেখে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন। এরপর আলেক্স হেলস ও রাইলে রুশো গড়েন ৩৯ বলে ৬৩ রানের জুটি। ইংলিশ তারকা হেলস ২৪ বলে ৩৩ রান করে বিদায় নিলেও আরেক প্রান্তে তাণ্ডব চালাতে থাকেন রুশো।
এরপর মাঠে নামেন ডি ভিলিয়ার্স। বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা এই দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা জুটি বাঁধেন স্বদেশী রুশোর সঙ্গে। তৃতীয় উইকেটে তারা ৩৮ বলে যোগ করেন ৬৭ রান।
চতুর্দশ ওভারে রুশো-ডি ভিলিয়ার্সকে একসঙ্গে ফেরান তাসকিন আহমেদ। চলতি বিপিএলে টানা দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন রুশো। দলের পক্ষে ৩৫ বলে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন তিনি। মারেন ৯টি চার ও ২টি ছয়। দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে ডি ভিলিয়ার্স ২১ বলে সমান ২টি করে চার ও ছয়ে করেন ৩৪ রান।
৭ রানের ব্যবধানে দুই থিতু হয়ে যাওয়া ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে রংপুর। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য তাদের তখনও দরকার ৫৮ রান। এরপর ইনিংসের ১৮তম ও ব্যক্তিগত শেষ ওভারে ফের জোড়া আঘাত করেন জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা তাসকিন। ৪২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শেষ করেন নিজের ৪ ওভারের স্পেল। তাতে সিলেটের দিকে হেলে পড়ে ম্যাচের ভাগ্য।
শেষ ২ ওভারে ২৪ রান প্রয়োজন দাঁড়ায় রংপুরের। উইকেটে অধিনায়ক মাশরাফির সঙ্গী ফরহাদ রেজা। এই রেজার ব্যাটিং ব্যর্থতায় রাজশাহী কিংসের কাছে শেষ ওভারে ম্যাচ হেরেছিল তারা। সেই দুঃসহ স্মৃতি পেছনে ফেলে ডানহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার খেলেন ম্যাচজয়ী ঝড়ো ইনিংস।
সিলেটের পেসার মেহেদী হাসান রানার ১৯তম ওভার থেকে আসে ১৯ রান। রেজা হাঁকান ১টি চার ও ১টি ছয়। ফলে রংপুরের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এরপর ম্যাচের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে অলক কাপালিকে বাউন্ডারি মেরে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন রেজা। অপরাজিত থাকেন ৬ বলে ১৮ রানে।
এর আগে সিলেট সিক্সার্স গড়েছিল বিশাল স্কোর। নির্ধারিত ২০ ওভারে তুলেছিল ৪ উইকেটে ১৯৪ রান। আগের ছয় ম্যাচের রানখরা কাটিয়ে সাব্বির রহমান জ্বলে ওঠেন। খেলেন ৫১ বলে ৮৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা নিকোলাস পুরান অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৪৭ রানে। রংপুর দলনেতা মাশরাফি ২ উইকেট নেন ৩১ রানে।
চলতি বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর গড়ে পাওয়া জয়ে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে আসলো রংপুর। ৭ ম্যাচে ৩ জয়ে তাদের অর্জন ৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে সিলেটের সংগ্রহ সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট। তাদের অবস্থান তালিকার ছয় নম্বরে।
চোট নিয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি তারকা ওয়ার্নারের শেষ ম্যাচ ছিল এটি। এদিন ২১ বলে ১৯ রান করে মাশরাফির শিকার হন তিনি।
মাত্র ৭ ম্যাচ খেলে বিপিএলে নিজের প্রথম অভিযানের ইতি টানতে হচ্ছে ওয়ার্নারকে। বিদায়ী ম্যাচে অবশ্য হারের হতাশা সঙ্গী হলো বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আপাতত নিষিদ্ধ থাকা এই তারকার।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড