অধিকার ডেস্ক ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:২৫
মহান আল্লাহ তাআলা এই পৃথিবীতে মানুষ ও জিন জাতিকে পাঠিয়েছেন তার ইবাদতের জন্য। আল্লাহ্র আদেশ মেনে চলা, তার পছন্দনীয় কাজ করাই ইবাদত। একজন মুসলিম ব্যক্তির ইবাদত সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নির্দেশনা রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব ‘আল কুরআনে’। এর পাশাপাশি রয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী ও জীবনাচরণ অর্থাৎ হাদিস।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে জীবনের প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে সঠিক ব্যাখ্যা জানার অধিকার রয়েছে সকল মুসলিমের। আপনার সেই অধিকার পূরণের লক্ষ্যেই 'দৈনিক অধিকার'- এর ইসলামিক প্রশ্ন-উত্তর বিষয়ক আয়োজন- ‘কুরআনের আলো এবং আপনার জিজ্ঞাসা’।
আপনি জানতে চাইতে পারেন নামাজ, রোজা, হজ বা জাকাত সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে। দৈনন্দিন জীবনের যে কোনো বিষয় সম্পর্কে ইসলামের বিধান কী তাও জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আপনার করা প্রশ্নের জবাব দেবেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ইসলামিক স্কলার ও আলেমগণ।
কীভাবে প্রশ্ন পাঠাবেন :
আপনার প্রশ্ন আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন যে মাধ্যমগুলোতে-
- দৈনিক অধিকারের ফেসবুক পেজের পিনপোস্টের কমেন্ট বক্সে - দৈনিক অধিকারের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে - ([email protected]) ইমেইল এড্রেসে
বি.দ্র- প্রশ্নের সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত করুন আপনার নাম, বয়স এবং জেলা।
আজকের প্রশ্ন : নামাজে তো, নাওয়াইতুয়ান উসাল্লি'য়ালা + কোন ওয়াক্তের কত রাকাআত ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত পড়া হচ্ছে + কা' বাতিশ শারিফাতি + আল্লাহু আকবার- আগে / পূর্বে এইভাবে নিয়ত করা হত। কিন্তু বর্তমানে অনেক শাইখ, মুফতি, আলেমেদ্বীন এভাবে নিয়ত করাকে বিদাআত বলছেন। তাহলে তো ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজের নিয়ত সংখ্যা ঠিক রেখে "বাংলাতেই" মনে মনে করতে হবে? প্রশ্ন হলো- এই বক্তব্য সঠিক কি না?
উত্তর : নিয়ত আরবী শব্দ। যার অর্থ হল, ইচ্ছা বা সংকল্প। আর ইচ্ছার স্থান হচ্ছে অন্তর। তা মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে নবী! (আপনি বলে দিন, তোমরা মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান জমিনে যা কিছু আছে সে সবই তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (সূরা আল ইমরান- ২৯)
উমার বিন খাত্তাব রা. বলেন, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, হে লোক সকল! কাজ-কর্মের ফলাফল দৃঢ় সংকল্পের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মানুষের ভাগ্যে তাই জুটবে যা সে নিয়ত বা সংকল্প করেছে। (সহীহ বুখারী, হা- ৬৪৭০)
একজন বিবেকবান, সুস্থ মস্তিষ্ক, বাধ্য করা হয়নি— এমন লোক কোনো কাজ করবে আর সেখানে তার কোনো নিয়ত বা ইচ্ছা থাকবে না সেটা সম্ভব নয়। নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, সুতরাং নামাজের পূর্বে নিয়ত করা প্রয়োজন। নিয়ত হল অন্তরের সাথে দৃঢ় সংকল্প, শব্দের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রা. তার পূর্ণাঙ্গ নামাজ শিক্ষা বইয়ের ১০১-১০৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত সকল নামাজের নিয়ত আরবিতে উল্লেখ করেছেন।
অবশ্য উক্ত বইয়ের টিকা লিখতে গিয়ে মাওলানা আজিজুল হক সাহেব লিখেছেন যে, আমাদের সমাজে নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণের বাধ্য বাধকতা স্বরূপ যে কিছু গৎবাঁধা আরবি শব্দের প্রচলন আছে তা নিষ্প্র্রয়োজন। নিয়ত পড়ার বিষয় নয় বরং নিয়ত করার বিষয় এবং এর সম্পর্ক মুখের সাথে নয় বরং অন্তরের সাথে। (পূর্ণাঙ্গ নামাজ শিক্ষা– ১৪৩ পৃষ্ঠা)
সুতরাং অন্তরের দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছা করার নামই হল নিয়ত। মুখে আরবিতে নামাজে নিয়ত পড়া নব উদ্ভাবিত বিষয়, আর তা বিদআত এবং বিদআত বর্জনীয়।
প্রশ্নকারি : নজরুল ইসলাম, রাজশাহী
উত্তর দিয়েছেন : মাওলানা আখতারুজ্জামান খালেদ, সাবেক ইমাম ও খতিব।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড