• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মসজিদে ঘোষণা দিয়েও কেন্দ্রে ভোটার আনা যায় না : মেনন

  অধিকার ডেস্ক

১৯ জুন ২০১৯, ১৮:৩৯
রাশেদ খান মেনন
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের আনা যায় না। এটা কেবল নির্বাচনের জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

বুধবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে তার দল, এমনকি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। বরং তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেওয়ার ব্যাপারে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

‘রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন অংশ যদি দেশের ওপর নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তাহলে রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচন নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে,’ যোগ করেন তিনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের শরিকদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকলে কেউ সংগঠন, আন্দোলন, ভোট নিয়ে এগুতে পারে না।

সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রার পথে কাঁটা হয়ে রয়েছে আর্থিক খাতের দুর্গতি বলে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক খাতে লুটপাট, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা কারও অবিদিত নয়। ঋণখেলাপির দায়ে ব্যাংকগুলো ন্যুব্জ। চলছে তারল্য সঙ্কট। করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঘাটতি মূলধন পূরণ করার জন্য বরাদ্দ এবারেও রাখা হয়েছে বাজেটে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন ভূমিকা দূরে থাক, ব্যাংকগুলোকে কার্যকর নজরদারি করতেও অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। নিজের অর্থই তারা সামাল দিতে পারেনি এবং তার কোনও জবাবদিহিতা দেশবাসী পায়নি। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক প্রদান, ব্যাংক মালিকদের আবদারে ব্যাংক আইন সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া, একই ব্যক্তি একাধিক ব্যাংকের মালিক বনে ব্যাংক খাতকে নিয়ন্ত্রণ করা, ব্যাংক মালিক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক সিআরআর নির্ধারণ করা—এসবই ব্যাংক খাতে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

ঋণখেলাপি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ১৪ দলের শীর্ষ এই নেতা বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন আর এক টাকাও ঋণখেলাপি হবে না। অথচ ওই প্রজ্ঞাপনের এক মাসের মধ্যে ঋণখেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে যা এই বাজেটের পরিমাণের এক পঞ্চমাংশ। আর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কীভাবে নির্দিষ্ট হবে তা জানা নেই।

কালো টাকার মালিকদের বিশেষ দেওয়ার প্রসঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, কালো টাকা দিয়ে জমি ফ্ল্যাট কেনার বিশেষ সুবিধা দান, বিপুল পরিমাণ পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কোনও প্রক্রিয়া না থাকা কেবল ধনীদের জন্য। আর দেশের বিকাশমান মধ্যবিত্ত এক্ষেত্রে বিশেষ চাপের মধ্যে থাকবে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের জন্য জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারত উল্লেখ করে সংসদে মেনন বলেন, হেফাজতে ইসলামসহ কিছু ধর্মবাদী দল এর বিরোধিতা করেছে। জানি না এখানেও আপস হয়েছে কিনা। কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে স্বীকৃতি দিলেও, তারা নিচের দিকে কোনও পরিবর্তন আনতে রাজি নয়। এমনকি জাতীয় সঙ্গীতকে রবীন্দ্র সঙ্গীত বলে আখ্যা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঠ্যাং ভেঙে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। দাবি করেছে বেফাক একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের হুজুরের কথা ছাড়া সরকারের কোনও নির্দেশ মানবে না।

ওডি/এএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড