• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাজা স্থগিত ও প্যারোলই ভরসা খালেদার

  বিশেষ প্রতিবেদক

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:২৮
খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ছবি : সংগৃহীত)

দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। তিনি বর্তমানে কারাবন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন। খালেদা জিয়ার কারাজীবনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তির কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি তার দল। বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা গত দুই বছরে জামিনে মুক্ত করার আইনি লড়াইয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। দল বহু কর্মসূচি দিলেও সে-অর্থে মাঠে নামেনি বা সরকারের কড়াকড়ির জন্য নামতে পারেনি। মিডিয়া, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফখরুল-রিজভীরা শুধু গর্জনই দিয়ে গেছেন। এখন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার মাত্র দুটি পথ রয়েছে— এক প্যারোল, দুই দণ্ড স্থগিত।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্র এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপির নেতাদের ধানাই-পানাই (প্রলাপ বাক্য, উদ্ভট বক্তব্য) কোনো কাজে আসবে না। সরকার তাদের কথায় ভয় পায় না। শেখ হাসিনা সরকারের ১১ বছরে অনেক কিছুই ঘটেছে, মানুষের ভাগ্য বদল হয়েছে, একাত্তরের ঘাতকদের বিচার হয়েছে, দেশ-বিদেশের অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা থেমে যাননি, ভয় পাননি, পাবেনও না। সুতরাং ফখরুল-রিজভীদের (বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইমলাম আলমগীর ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী) ধানাই-পানাই কাজ হবে না।

তারা আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এখন দুটি পথ খোলা রয়েছে। তা হলো প্যারোল ও দণ্ড স্থগিত। তবে এর জন্য বিএনপিকে আইনি পথে এগোতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। এতে তাদের (বিএনপির) নেত্রীর মুক্তি মিলবে কি না সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন। তবে এতে মুক্তির সম্ভাবনা অনেকটাই রয়েছে। কাজেই সরকারকে হুমকি দিয়ে সময় নষ্ট না করে বিএনপির নেতাদের উচিত হবে আইনি পথে আসা। যে দুই মামলায় তাদের নেত্রীর সাজা হয়েছে সে দুই মামলা ক্ষমতাসীনদের কেউ করেননি। আর সাজা তো আদালত দিয়েছেন, এই সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আদালত তাদের নেত্রীকে মুক্তি দিলে সরকারের হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না।

বিএনপি আবারও আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছে, হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। তবে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি প্যারোল (বিশেষ ব্যবস্থায় সাময়িক মুক্তি) ও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের বিশেষ বিবেচনায় সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ খোলা আছে।

এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা জানান, বিএনপি কোন পথ বেছে নেবে সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার করা জামিনের আবেদনটি বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রত্যাখ্যান করেন হাইকোর্ট। বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে চেয়ে করা জামিনের আবেদনটিতে কোনো সারবত্তা নেই জানিয়ে শুনানি শেষে তা প্রত্যাখ্যান করেন বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

দুদকের দুটি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে কারা কর্তৃপক্ষের অধীনে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যদি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসা নিতে সম্মতি দেন তাহলে দ্রুত তার উন্নত চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে মেডিকেল বোর্ড চাইলে নতুন কোনো বিশেষজ্ঞকেও অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে বলে আদেশ দিয়েছে আদালত।

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের কারামুক্তির প্রশ্নে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা ও গুঞ্জনের মধ্যে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ হলো।

ওডি/এমআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড