• বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন

সর্বশেষ :

sonargao

৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ আগস্ট ২০২২, ১২:৫৭
৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর
বোমা হামলার বিধ্বস্ত এলাকা (ফাইল ছবি)

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছরপূর্তি আজ। দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে নৃশংস এ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। পরিকল্পিতভাবে দেশব্যাপী এ আক্রমণ চালানো হয়। মুন্সিগঞ্জ ছাড়া দেশের সব জেলায় প্রায় ৫০০ পয়েন্টে এ হামলা হয়। এতে দুজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১০৪ জন।

পুলিশ সদরদফতর ও র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সারাদেশে ১৫৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে আটটি, আরএমপিতে চারটি, কেএমপিতে তিনটি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে সাতটি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে সাতটি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে আটটি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ছয়টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে তিনটি।

এর মধ্যে ১৪২টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বাকি ১৭টি মামলায় ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামি শনাক্ত করতে না পারায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ১৫৯টি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিল ১৩০ জন। গ্রেফতার করা হয় ৯৬১ জনকে। এক হাজার ৭২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

পুলিশ জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারাদেশে ১৫৯টি মামলার মধ্যে ৯৪টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এসব মামলায় ৩৩৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এখনো ৫৫টি মামলা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। যার আসামির সংখ্যা ৩৮৬ জন।

মামলার বিচারের বিষয়ে জানা গেছে, সিরিজ বোমা হামলায় রায় হওয়া মামলাগুলোতে ৩৪৯ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়। এর মধ্যে আটজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এসব মামলায় খালাস পেয়েছেন ৩৫৮ জন। জামিনে রয়েছের ১৩৩ আসামি।

এছাড়া ঢাকায় বিচারাধীন পাঁচটি মামলা সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঝালকাঠি জেলার দুই বিচারককে হত্যার জন্য ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ ছয় জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান, তার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই, সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি, আব্দুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ ও সালাউদ্দিনকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

সর্বশেষ চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে সারাদেশে শক্ত অবস্থান তৈরি করে জঙ্গিরা। ২০০৫ সালের পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ধারাবাহিক বোমা হামলায় বিচারক ও আইনজীবীসহ ৩০ জন নিহত হন। আহত হন ৪ শতাধিক। ওই বছরের ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষ্মীপুরের আদালতে জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত ও বিচারকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।

এর কয়েকদিন পর সিলেটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীর ওপর বোমা হামলার ঘটনায় তিনি ও তার গাড়িচালক আহত হন। ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাড়ে ও সোহেল আহম্মদ। এ হামলায় আহত হন অনেকে।

সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি ও চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাকে প্রবেশ করে আত্মঘাতী এক জঙ্গি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ হামলায় আইনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। আত্মঘাতী হামলাকারী জঙ্গিও নিহত হয়।

একই দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে জেএমবির আত্মঘাতী জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেখানে রাজিব বড়ুয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবল ও একজন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। পুলিশসহ প্রায় অর্ধশত আহত হন।

১ ডিসেম্বর গাজীপুর ডিসি অফিসের গেটে আবারো বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত হন গাজীপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন।

৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর পাড় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর অফিসের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী জঙ্গিরা। সেখানে স্থানীয় উদীচীর দুই নেতাসহ আটজন নিহত হন। আর আহত হন শতাধিক লোক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড