• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শেষ বেলায় হাসলেন গরু বিক্রেতারা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ জুলাই ২০২০, ২১:২৫
অধিকার
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার কোরবানির পশুর হাটগুলোতে সপ্তাহজুড়ে বেপারীরা অস্বস্তির মধ্যে থাকলেও যারা শেষ মুহূর্তের আশায় ছিলেন, তারাই শেষ হাসি হেসেছেন।

শুক্রবার (৩১ জুলাই) দুপুর থেকে কয়েক ঘণ্টা রাজধানীর বেশ কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে জমজমাট বেচা-কেনা দেখা গেছে। অধিকাংশ হাট বিকালের ফাঁকা হয়ে যায়।

দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর হাটে গিয়ে দেখা যায় হাতেগোনা কয়েকটি গরু। বরিশাল থেকে সেখানে গরু নিয়ে আসা বেপারী জামাল মিয়া জানান, সপ্তাহজুড়ে হাট প্রায় ফাঁকা থাকলেও গত বুধবার থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। শেষ দিকে এসে লাভও হচ্ছে তাদের।

তিনি বলেন, ১২টা গরু নিয়া আইছিলাম। বেঁচা হইসে ১১টা। একটা খালি আছে। প্রথম ৫টা গরু একদম লসে বিক্রি করছি। প্রতিটা গরুতে কম না হলেও ১৫ হাজার টাকার উপর লস খাইসি। কিন্তু বাকিগুলোতে ৮-৯ হাজার টাকা লাভ থাকছে। এই করোনার মধ্যেও এমন দাম পামু, সেডাই তো জানতাম না।

এই হাটে মেহেরপুরের গাংনী থেকে গরু নিয়ে আসা বেপারী বাবু মিয়া বলেন, প্রথম দিকে আমরা যে দাম কইতেছিলাম, কাস্টমাররা তার অর্ধেক দাম কইত। এখন শেষ দিকে আইসা একটু লাভ হইসে। আমার আটটা গরুর সবকয়ডাই বিক্রি হইসে।

ঝিনাইদহ থেকে আসা বেপারী কামাল বলেন, শেষ দিকে কাস্টমাররাও বুঝতে পারছেন আমাদের অবস্থা। দামে খুব একটা কম বলতাসেন না এখন। আমার ছয়টা গরুর মধ্যে চারটা গরু বিক্রি হইসে। শেষ দুটা গরু বিক্রি করেই বাড়ি যামু।

রাজধানীর কমলাপুর হাট থেকে ৯০ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছেন বাসাবোর সাদী রহমান।

তিনি বলেন, শেষ দিকে দাম ছাড়তে রাজি না বেপারীরা। কালকে কোরবানি। এখন কী আর করা যাবে? একটু বেশি দাম দিয়েই কিনে নিলাম গরু। তবে খুব যে বেশি দাম দিতে হয়েছে তা নয়। করোনার মধ্যে দাম একটু বেশি চাওয়াই স্বাভাবিক।

জাতীয় পার্টির নেতা মনিরুল ইসলাম মিলনও গরু কিনেছেন কমলাপুর হাট থেকে।

তিনি ফেইসবুকে লিখেছেন, ঢাকার বেশিরভাগ হাটে গরু নাই। বিশেষ করে উত্তরা, পূর্বাচল ৩০০ ফিট, ডুমনী, সাঈদনগর, আফতাবনগর, শাহজাহানপুর হাটে কোনো গরু নাই সকাল থেকে।

‘সারা দিন অনেক হাট ঘুরে অবশেষে কমলাপুর গিয়ে অনেক কষ্টে চড়া দামে একটা গরু কিনলাম কোরবানি দেওয়ার নিয়তে। সেখানেও গরু কম। গড়ে একটা গরুর জন্য কমপক্ষে ১৫-১৬ হাজার ক্রেতা ঢাকার হাটে। এটা কৃত্রিম সঙ্কট নয়, আসলেই গরুর তীব্র সংকট।’

প্রতিবছর কোরবানি সামনে রেখে গ্রামের হাটগুলো থেকে গরু কিনে ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোর হাটে তোলেন বেপারীরা। তবে এবার করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সারা দেশের গ্রামের হাটগুলোতে গরুর ক্রেতা সংকটের খবর এসেছে। ক্রেতা কম থাকায় প্রত্যাশিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে গরু ছাড়তে হয়েছে প্রান্তিক খামারি ও চাষিদের।

শেষ দিনে ঢাকার হাটগুলোতে গরু কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বেপারীদের গ্রাম থেকে গরু কম কেনার ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিকালে রাজধানীর আফতাবনগর হাটে কথা হয় ময়মনসিংহ থেকে আসা বেপারী শরীফ মিয়অ সঙ্গে।

তিনি বলেন, হাটের অবস্থা বুধবার সন্ধ্যা থেকে মোটামুটি ভালো যাইতেসে। ক্রেতারা আসছে। হাটে যে গরু আছিল, তাও শেষ হয়ে যাবে সন্ধ্যার পর।

এই হাটে মা অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক তরিকুল ইসলাম বলেন, সাতটা গরু আনছিলাম। তার মধ্যে প্রথম চারটা গরু বিক্রিতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মতো লস খাইসি। দুইটাতে ৫-৬ হাজার টাকা লাভ করলেও লস তো পোষাইব না।

বাড্ডার আদর্শনগরের বাসিন্দা শোভন আফতাবনগর হাট থেকে একটি ষাঁড় কিনেছেন ৮০ হাজার টাকায়। তাতে ২০ হাজার টাকার মতো বেশি দিতে হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

শোভন বলেন, এই গরুর দাম খুব বেশি হলে ৬০ হাজার টাকা হইত। এই গরু কিনা লাগল ২০ হাজার টাকা বেশি দিয়া। কী করা যাবে? কোরবানি তো দিতে হবে। তাই ৮০ হাজার টাকাই দিতে হল।”

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোরবানির পশুর হাটগুলোর ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল গড়াতেই হাট প্রায় শূন্য।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড