• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র কবি হেলাল হাফিজ

  সাহিত্য ডেস্ক

০৭ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৪
কবিতা
ছবি : কবি হেলাল হাফিজ

‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্য সংকলন নিয়ে বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে বাংলা সাহিত্যে একজন আধুনিক কবির আবির্ভাব ঘটে। যিনি শুধুমাত্র একটি কাব্যগ্রন্থ দিয়ে আলোড়ন তুলেছেন পাঠকদের হৃদয়ে। বলছি বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র কবি হেলাল হাফিজের কথা।

তিনি ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায় জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেন নেত্রকোণা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোণা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায়ই তিনি দৈনিক পূর্বদেশে সার্বক্ষণিক সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন।

তার অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ এ কবিতার দুটি পংক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ বাংলাদেশের কবিতামোদী ও সাধারণ পাঠকের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়ে থাকে। তিনি সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কাজ করেছেন। আজ এই মানুষটির জন্মদিন।

২০১২ সালের একুশে বইমেলায় কবি হেলাল হাফিজের প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা ৭১’। তার জন্মদিন উপলক্ষে আজ পাঠকদের সামনে এই স্বল্পপ্রজ কবির ‘অচল প্রেমের পদ্য’ কবিতাটির (১-১৩) অংশ তুলে ধরা হলো-

হেলাল হাফিজের ‘অচল প্রেমের পদ্য’

১ আছি। বড্ড জানান দিতে ইচ্ছে করে, – আছি, মনে ও মগজে গুন্‌ গুন্‌ করে প্রণয়ের মৌমাছি।

২ কোনদিন, আচমকা একদিন ভালোবাসা এসে যদি হুট করে বলে বসে,- ‘চলো যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাই’, যাবে?

৩ তোমার জন্য সকাল, দুপুর তোমার জন্য সন্ধ্যা তোমার জন্য সকল গোলাপ এবং রজনীগন্ধা।

৪ ভালোবেসেই নাম দিয়েছি ‘তনা’ মন না দিলে ছোবল দিও তুলে বিষের ফণা।

৫ তোমার হাতে দিয়েছিলাম অথৈ সম্ভাবনা তুমি কি আর অসাধারণ? তোমার যে যন্ত্রনা খুব মামুলী, বেশ করেছো চতুর সুদর্শনা আমার সাথে চুকিয়ে ফেলে চিকন বিড়ম্বনা।

৬ যদি যেতে চাও, যাও আমি পথ হবো চরণের তলে না ছুঁয়ে তোমাকে ছোঁব ফেরাবো না, পোড়াবোই হিমেল অনলে।

৭ আমাকে উস্টা মেরে দিব্যি যাচ্ছো চলে, দেখি দেখি বাঁ পায়ের চারু নখে চোট লাগেনি তো; ইস্‌! করছো কি? বসো না লক্ষ্মীটি, ক্ষমার রুমালে মুছে সজীব ক্ষতেই এন্টিসেপটিক দুটো চুমু দিয়ে দেই।

৮ তুমি কি জুলেখা, শিরী, সাবিত্রী, নাকি রজকিনী? চিনি, খুব জানি তুমি যার তার, যে কেউ তোমার, তোমাকে দিলাম না – ভালোবাসার অপূর্ব অধিকার।

৯ আজন্ম মানুষ আমাকে পোড়াতে পোড়াতে কবি করে তুলেছে মানুষের কাছে এওতো আমার এক ধরনের ঋণ। এমনই কপাল আমার অপরিশোধ্য এই ঋণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

১০ হয়তো তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি নয় তো গিয়েছি হেরে থাক না ধ্রুপদী অস্পষ্টতা কে কাকে গেলাম ছেড়ে।

১১ যুক্তি যখন আবেগের কাছে অকাতরে পর্যুদস্ত হতে থাকে, কবি কিংবা যে কোনো আধুনিক মানুষের কাছে সেইটা বোধ করি সবচেয়ে বেশি সংকোচ আর সঙ্কটের সময়।

হয় তো এখন আমি তেমনি এক নিয়ন্ত্রনহীন নাজুক পরিস্থিতির মুখোমুখি, নইলে এতদিন তোমাকে একটি চিঠিও লিখতে না পারার কষ্ট কি আমারই কম!

মনে হয় মরণের পাখা গজিয়েছে।

১২ নখের নিচেরেখেছিলাম তোমার জন্য প্রেম, কাটতে কাটতেসব খোয়ালাম বললে না তো, - ‘শ্যাম, এই তো আমি তোমার ভূমি ভালোবাসার খালা, আঙুল ধরোলাঙ্গল চষো পরাও প্রণয় মালা’।

১৩ তুমি আমার নিঃসঙ্গতার সতীন হয়েছ!

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড