• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

'প্লগিং' পরিবেশবান্ধব ব্যায়াম

  সৈয়দ মিজান

২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৫৭
প্লগিং
প্লগিং জনপ্রিয় হচ্ছে সারা বিশ্বেই। (ছবি : সংগৃহীত)

জগিংয়ের নাম প্রায় সবাই জানেন। কিন্তু যদি বলি প্লগিংয়ের কথা! তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগবে- প্লগিং! এটা আবার কী? প্লগিং হচ্ছে নিজে ব্যায়াম করার পাশাপাশি চারপাশের পরিবেশের ময়লা আবর্জনাকে পরিষ্কার করে ফেলা। সুইডিশ ভাষায় মাটি থেকে কিছু তোলাকে বলা হয় ‘প্লকা আপ’। এর সঙ্গে ইংরেজি শব্দ ‘জগিং’ যুক্ত করে সৃষ্টি হয়েছে ‘প্লগিং’ শব্দটির।

শরীরচর্চার উদ্দেশ্যে দৌড়ানোর সময় রাস্তাঘাট থেকে ময়লা আবর্জনা জড়ো করছে মানুষ। সুইডেন থেকে এই পদ্ধতিটি উদ্ভাবিত হলেও সারা বিশ্বেই এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এটিকে গ্রহণ করেছে সানন্দে।

দৌড়ানো বা জগিং করার সময় স্বেচ্ছায় পরিবেশের আবর্জনা জড়ো করার এই ধারণাকেই বলা হচ্ছে প্লগিং। জগিংয়ের পোশাকের সাথে একটি ব্যাগও বহন করবেন তারা যেন দৌড়ানোর সময় রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা তুলে ব্যাগে নিতে পারেন।

প্লগিং ধারণাটি উদ্ভাবন করেছেন সুইডেনের নাগরিক আলেক্সান্ডার আলস্ট্রং। প্লগিং উদ্ভাবন করা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'ফিনল্যান্ডের একটি স্কি রিসোর্টে থাকার সময় আমি প্রথম সেখানকার রাস্তাঘাটের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা শুরু করি। তখন হেঁটে হেঁটেই ময়লা কুড়াতাম।'

কিছুদিন পর তিনি স্টকহোম চলে আসেন। সেখানে এসে তিনি দেখতে পান রাস্তাঘাটে প্রচুর ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। এগুলো পরিষ্কার করারও যেন কেউ নেই। তখন তার মাথায় ভাবনা আসে নিজের শহরকে পরিষ্কার রাখার। সেই থেকে শুরু করলেন নিজের শহর পরিষ্কার সকালের জগিংয়ের মাধ্যমেই।

অ্যালেক্সান্ডার আলস্ট্রং শুরুর গল্পটা বলতে গিয়ে বলেন, 'একদিন জগিংয়ের সময় আমি একাই রাস্তায় ময়লা কুড়ানো শুরু করি। কয়েকদিনের মধ্যেই মানুষজন বিষয়টি লক্ষ করে ও উৎসাহী হয়ে ওঠে।'

প্লগিং

ধীরে ধীরে অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে প্লগিংয়ের ধারণা। (ছবি : সংগৃহীত)

তবে শুরুটা হুট করে একা শুরু করলেও এই ধারণাটি জনপ্রিয়তা পেতে বেশি সময় লাগেনি। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৪৫টি দেশে রয়েছে বিভিন্ন প্লগিং গ্রুপ। যারা জগিং করতে করতে পথেঘাটে পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেন। কোনো কোনো দেশে নানান আয়োজন করা হয় প্লগিং শুরু করার জন্য। কোথাও বা কনসার্ট আবার কোথাও মিনি ম্যারাথনেরও আয়োজন করা হয় প্লগিংয়ের চর্চাকে ছড়িয়ে দিতে।

স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে এটি একটি ভালো ব্যায়াম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাদের মতে এই ব্যায়ামে একঘেয়েমির কোনো সুযোগ নেই।

প্লগিংকে জনপ্রিয় করার পেছনে আরেকজন মানুষের অবদান রয়েছে। তিনি হলেন সুইডেনের পরিবেশ বিজ্ঞানী এরিক হুস। তিনি যেখানেই যান সেখানেই প্লগিং শুরু করে দেন। কেউ তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেও তিনি বিব্রত বোধ করেন না।

তিনি বলেন, 'পথেঘাটে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকার সমস্যাটা যতটা ছোট মনে হয় আসলে বিষয়টি ততটা ছোট নয়। গবেষণা অনুযায়ী সমুদ্রের তলদেশের ৮৫ ভাগ আবর্জনাই ভূপৃষ্ঠ থেকে তৈরি হয় আর এই আবর্জনার সিংহভাগই প্লাস্টিক। এর মধ্যে অতি ক্ষুদ্র আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীদের মাধ্যমে অনেক সময় আমাদের দেহে ফেরত আসে এবং বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।'

প্লগিংয়ের আবিষ্কারক আলস্ট্রংয়ের মতে, 'সভ্য সমাজে আবর্জনার কোনো জায়গা নেই। আর সভ্য সমাজের সদস্য হিসেবে, আমাদের তৈরি করা জঞ্জাল পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমাদেরই।'

সূত্র : বিবিসি

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড