• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সঙ্গীর ঘ্রাণ, ভাবনা আর সৌন্দর্যের কারণেই প্রেমে পড়ি আমরা!

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:২৬
ভালোবাসা
ছবি : প্রতীকী

হঠাৎ করে অনেক মানুষের ভীড়ে কাউকে খুব ভালো লাগা, তারপর ভালোবাসা। নিজেদের মধ্যকার নতুন নতুন দিক আবিষ্কার করার একটা প্রচণ্ড উত্তেজক আর ঘোর লাগা সময়। এরপর অনেকটা সময় পর খুব আরামদায়ক, অথচ নিঃস্পৃহ একটা সম্পর্ক।

ভালোবাসা, সেটা তিক্ততায় রূপ নিক, কিংবা নির্ভরতায়- এর পেছনে কারণ হিসেবে কী কাজ করে? কেন আমরা ভালোবাসি? এইতো আগামীকাল পালন করা হবে ভালোবাসা দিবস। চলুন না, এই ভালোবাসা দিবসে জেনে নেওয়া যাক আমাদের অন্য কাউকে ভালোবাসার পেছনে নিহিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটি।

ভালোবাসার তিনটি পর্যায়-

গবেষকদের মতে, প্রেমে পড়ার মোট তিনটি ভিন্ন পর্যায় রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে কাজ করে কামনা। নারী ও পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই এর ফলে হরমোন নিঃসৃত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন এবং নারীদের ক্ষেত্রে অস্ট্রোজেন হরমোন নিঃসরিত হয় এসময়। অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের চাইতে মানুষ এদিক দিয়ে একেবারেই আলাদা।

দ্বিতীয় পর্যায়টির নাম আকর্ষণ। এটি মানুষের ভেতরে অনেকটা মাদকের মতোই কাজ করে। মস্তিষ্কে নানারকম রাসায়নিক পদার্থ এসময় নিঃসরিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ডোপামিন (আনন্দ), অ্যাড্রেনালিন (মানসিক যুদ্ধ), নোরেপাইনেফ্রিন (সতর্কতা)সহ আরও বেশ কিছু হরমোন। পছন্দের মানুষকে দেখতে পেলেই যে আপনি হাসেন, ঘামতে শুরু করেন, অস্থির হয়ে যান- এর পেছনে মূলত অ্যাড্রেনালিন কাজ করে থাকে। ভালোবাসার প্রথম পর্যায়ে কারো ছবি দেখলেও মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরিত হয়। ফলে, আমরা আনন্দ পাই।

তৃতীয় পর্যায় হিসেবে কাজ করে সংশ্লিষ্টতা। প্রাথমিক হরমোনগুলোর পর মস্তিষ্কে কাজ করে অক্সিটোসিন বা কাডল হরমোন। এই সময় আমরা অনেক বেশি নিরাপদবোধ করি ভালোবাসার মানুষদের সাথে।

মস্তিষ্ক স্থির হয় এবং আমরা পরবর্তী পর্যায়ে ভালোবাসার সম্পর্কটিকে এগিয়ে নিতে চাই। তবে এই খুব সরাসরি কারণগুলো ছাড়াও এমন কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ আছে যেগুলোরকে ভালোবাসার পেছনে নিহিত কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সেগুলো কী? চলুন, জেনে নেওয়া যাক!

সঙ্গীর ঘ্রাণ-

আমাদের সবারই একটি নির্দিষ্ট ঘ্রাণ থাকে। না, সবাই যে ঘ্রাণ পায় সেটার কথা এখানে বলা হচ্ছে না। একটা নির্দিষ্ট রকমের ঘ্রাণ যা শুধু নির্দিষ্ট কিছু হরমোন থেকেই পাওয়া যায়। এই ঘ্রাণ আমাদেরকে একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হতে সাহায্য করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরা সেই পুরুষের ঘ্রাণকেই পছন্দ করে যাদের সাথে তারা স্বাস্থ্যবান সন্তান জন্ম দিতে পারবে।

ভালোবাসা

এক গবেষণায় কয়েকজন পুরুষের শার্ট নারীদের দেওয়া হয় এবং সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ নারী শুধু সেই পুরুষের ঘ্রাণ পছন্দ করেন যার শরীর সবচাইতে বেশি রোগহীন। এর কারণ হতে পারে আমাদের আদিম কোনো জিন। তবে অদ্ভুত শোনালেও এমনটা হয় থাকে। ঘ্রাণ আমাদেরকে প্রেমে পড়তে সাহায্য করে।

চিন্তা ভাবনা-

আমরা হয়তো অনেক সময়েই খুব ভালো করে জানি না, তবে আমাদের অবচেতন মন বুঝে যায় যে, সামনের মানুষটি অনেকটাই আপনার মতো করে চিন্তা করে। গবেষকেরা কয়েক হাজার জুটির মধ্যে এই পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন যে, কয়েকদিন হলো সম্পর্কে জড়িয়েছেন এমন জুটির ক্ষেত্রেও অনে মিল রয়েছে। শারীরিকভাবে হয়তো সেটা বোঝা যাচ্ছে না, আপাতদৃষ্টিতে তা ভিন্নরকম। তবে মূল কিছু ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো এক।

সৌন্দর্য-

সৌন্দর্য অবশ্য খুবই আপেক্ষিক বিষয়। এমন নয় যে, ফর্সা বা লম্বা মানেই সুন্দর। আপনি যাকেই ভালোবাসছেন, তাকে দেখতে আপনার কাছে খুব সুন্দর মনে হচ্ছে- অন্তত এই ব্যাপারটি উপস্থিত থাকতে হবে। অনেকসময় মানুষের কাজ তাকে সুন্দর বানিয়ে দেয়। কখনো আমাদের পরিচিত চেহারার সাথে মিলে যায় এমন চেহারা দেখলে তাকেও আমরা সুন্দর ভেবে থাকি।

ভালোবাসা

সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে ৭:১০ হিসেবে তার সৌন্দর্য কাজ করে। নারীরা ৯:১০ শারীরিক গঠনের পুরুষকেই বেশি পছন্দ করে। গবেষণানুসারে, ১২ শতাংশ বডি ফ্যাট আছে এমন পুরুষদের নারীরা পছন্দ করে।

আপনি কেমন পুরুষকে পছন্দ করবেন এর পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার উপরে। এই চারটি ব্যাপার বলা হয়েছে, তার অর্থ এই নয় যে, এগুলো উপস্থিত না থাকলে আপনি কোনো পুরুষের প্রতি আকর্ষণবোধ করবেন না।

তাই, ভালোবাসা দিবসে নিজের সব চিন্তাকে দূরে রেখে ভালোবাসার মেলায় হারিয়ে যান, ভালোবাসুন প্রিয়জনকে।

মূল লেখক- ডক্টর স্যামুয়েল লো, পার্কওয়ে হসপিটাল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড