পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থতার দায় অস্বীকার ওয়াশিংটনের

কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু নিরস্ত্রকরণের লক্ষ্যে চলমান আলোচনা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। যদিও তাদের সেই দাবিকে এরই মধ্যে অস্বীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (৫ অক্টোবর) সুইডেনের স্টকহোমে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা যাবত চলা আলোচনাটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয় বলে জানায় পিয়ংইয়ং।

মূলত এরপরই ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার উভয় পক্ষের মধ্যে ‘ভালো আলোচনা’ হয়েছে। এমনকি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুইডেন পক্ষ দুটির মধ্যে আরও আলোচনার উদ্যোগ নেবে বলেও আশাবাদ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, গত শনিবার বিকালে সুইডেনের স্টকহোমে এক বিশেষ বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিরা। গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন মধ্যকার সাক্ষাতের পর এটাই প্রথম দেশ দুটির আনুষ্ঠানিক আলোচনা।

বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে এরই মধ্যে মার্কিন ট্রাম্প বলেছেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে কিছু একটা করতে চায় পিয়ংইয়ং।’ যদিও এর কিছুক্ষণ পর উত্তর কোরীয় দলের প্রতিনিধিরা জানান, এখন আর বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না।

এ দিকে অঞ্চলটির পরমাণু বিষয়ক সর্বোচ্চ দূত কিম মিয়ং গিল বলেছিলেন, ‘সংলাপে আমাদের কোনো প্রত্যাশাই পূরণ হয়নি; যে কারণে শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের পুরনো ধ্যানধারণার কোনো পরিবর্তনই আনতে পারেনি। তাই ওয়াশিংটনকে আগে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা হতাশ।’

অপর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মরগান ওর্টেগাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) প্রতিনিধিদের মন্তব্য আজকের সাড়ে ৮ ঘণ্টার আলোচনার বিষয়বস্তু কিংবা উদ্যমের তেমন কোনো প্রতিফলন ঘটায়নি। এবারের আলোচনায় আমরা সৃজনশীল কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি এবং যা নিয়ে ইতোমধ্যে উত্তরের এই প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে।’

সম্প্রতি নিজেদের সাবমেরিন থেকে সফলভাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং জানায়, নিজ দেশের সমুদ্রসীমাকে বহিরাগত হুমকি থেকে রক্ষা ও আত্মপ্রতিরক্ষার সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্যই তাদের এই পরীক্ষা। গত ৩০ সেপ্টেম্বরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার বিষয়ে নিজেদের সম্মতি জানিয়ে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই দেশটি এই পরীক্ষাটি চালাল।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হ্যানয়ে ট্রাম্প-কিম মধ্যকার বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়াকে সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের কথা বলা হয়। যদিও এর প্রেক্ষিতে পিয়ংইয়ং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব ধরনের আন্তর্জাতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি জানায়।

আরও পড়ুন :- ইমরানের মধ্যস্থতায় আলোচনায় সম্মত ইরান-সৌদি

তখন উভয় পক্ষ পারস্পরিক সম্মতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় আলোচনাটি সম্পূর্ণভাবে ভেস্তে যায়। হ্যানয়ের সেই বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর গত ৩০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে ওয়ার্কিং লেভেলে আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। যদিও এখন পর্যন্ত সেই আলোচনা শুরু করা যায়নি।

ওডি/কেএইচআর