• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিক্ষোভের পর এবার হংকংয়ে মানববন্ধন, আরও কর্মসূচির আভাস

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ আগস্ট ২০১৯, ১১:৫৯
হংকংয়ে মানববন্ধন
হংকংয়ের সড়কে মানববন্ধনরত গণতন্ত্রকামীরা। (ছবিসূত্র : মার্কেট ওয়াচ)

গত কয়েক সপ্তাহ যাবত সরকার বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর এবার দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করেছেন হংকংয়ের গণতন্ত্রকামীরা। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দেশব্যাপী আয়োজিত নজিরবিহীন এই কর্মসূচিতে অংশ নেন লক্ষাধিক জনতা। মূলত এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে গোটা হংকং।

আয়োজকদের দাবি, সরকার বিরোধী চলমান এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানাতেই আমাদের এই মানববন্ধনের আয়োজন। মূলত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকলের অংশ গ্রহণে আমাদের এই আন্দোলন চলবে। যার অংশ হিসেবে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দেওয়া হবে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম 'বিবিসি নিউজে'র প্রতিবেদনে জানান হয়, এ দিন বিতর্কিত আসামী প্রত্যর্পণ বিল বাতিল ও দেশটির চীনপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে যোগ দেন সব বয়সের নারী-পুরুষ।

এবারের মানববন্ধনে গণতন্ত্রকামীরা হংকংয়ের ওপর অনৈতিকভাবে খাটানো চীনা প্রভাবের বিরুদ্ধেও শ্লোগান দেন। যেখানে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষেও দাবি তোলা হয়। যদিও যেকোনো অপ্রীতিকর অবস্থা নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। তবে এবার ঠিক কোনো রকম সহিংসতা না হলেও মানববন্ধনের কারণে গোটা হংকংয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল শিক্ষার্থী বলে দাবি আয়োজকদের।

হংকংয়ে বিক্ষোভ

হংকংয়ের বিমানবন্দর চত্বরে বিক্ষোভরত গণতন্ত্রকামীরা। (ছবিসূত্র : সিএনএন)

আসামী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে প্রায় পাঁচ মাসের বেশি সময় যাবত চলা এই বিক্ষোভে বর্তমানে উত্তাল হয়ে উঠেছে চীনা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি। যে কারণে গতকালের মানববন্ধন সফল হওয়ার পর এখন চলতি সপ্তাহেই হংকংয়ে আরও এক বড় ধরনের কর্মসূচি আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গণতন্ত্রকামীরা। যদিও এরই মধ্যে বিমানবন্দরে প্রবেশস্থলে বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে দেশটির হাইকোর্ট। তবে আজ শনিবার হংকংয়ের কিয়োন তুং জেলায় এবং আগামীকাল রবিবার (২৫ আগস্ট) জিউন অন এবং কোই চিং জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত মাসে ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশটিতে চীনপন্থি সরকার বিতর্কিত একটি আসামি প্রত্যর্পণ বিল পাসের উদ্যোগ নিলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন অঞ্চলটির সাধারণ জনগণ। তাদের আশঙ্কা বিলটি পাস হলে হংকংয়ের রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। পরবর্তীতে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বিলটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, বিলটি স্থগিত না রেখে পুরোপুরি বাতিল করা হোক।

প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক এই দিবসটির ২২ বছর পূর্তিতে গত ১ জুলাই আন্দোলনে সড়ক অবরোধ করেন গণতন্ত্রকামী লোকজন। প্রতি বছরের এই দিনে কর্মকর্তারা এক দিকে সরকারি ভবনগুলোতে উৎসব পালন করেন আর অপর দিকে গণতন্ত্রকামীরা অবস্থান নেন রাজপথে।

দীর্ঘদিন যাবত হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল থেকে অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দেয় দেশটি। এর আগে গত মাসেও চীনপন্থি এক বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশ।

হংকংয়ে বিক্ষোভ

হংকংয়ে বিক্ষোভরত এক গণতন্ত্রকামীকে পুলিশি আগ্রাশন থেকে রক্ষা করছেন সাংবাদিক। (ছবিসূত্র : রয়টার্স)

মূলত চীন এবং তাইওয়ানে আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে তখন গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভ দাঁড়ায় চীনের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে।

আরও পড়ুন :- চীনে মুসলিম নারীদের জোর করে বন্ধ্যা বানানো হচ্ছে

বেইজিংয়ের দুর্বল আইন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ডের কারণে হংকংয়ের সাধারণ মানুষ সেখানে কাউকে ফেরত পাঠাতে চাইছেন না। তাদের মতে, পার্লামেন্টে বিলটি পাস হলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রে চীনা হস্তক্ষেপের সুযোগ অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড