• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনায় প্রাণ গেছে উহান হাসপাতালের পরিচালকের

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৪৫
করোনায় প্রাণ গেছে উহান হাসপাতালের পরিচালকের
সদ্য প্রয়াত উহানের উচ্যাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিংয়ের (ছবি : সিনহুয়া)

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। গোটা বিশ্ব যখন মহামারি ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বিগ্ন, ঠিক তখনই মহামারি করোনার থাবায় প্রাণ গেছে উহানের উচ্যাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিংয়েরের।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে নির্ঘুম রাত কাটছিল উহানের উচ্যাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিংয়েরও। এ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়ে সকলের প্রেরণা জোগাচ্ছিলেন তিনি।

কিন্তু ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব একসময় তার শরীরেও দেখা দেয়। অনেক রোগী তার হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও পারলেন না তিনি। করোনা ভাইরাসের কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন লিউ। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত গত একদিনে করোনা ভাইরাসে আরও ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৮ জনে পৌঁছেছে। তাছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ হাজারের অধিক।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে যোগ দেওয়া নতুনদের মধ্যে অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের। তাছাড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছেন আরও তিন লক্ষাধিক মানুষ। কেবল তাই নয়, ভাইরাসটির শনাক্তস্থল চীনের সীমানা পেরিয়ে এর প্রাদুর্ভাব আরও অন্তত ২৪টি দেশে ছড়িয়ে গেছে।

বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এমনকি সিঙ্গাপুরেও কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

করোনা ভাইরাস কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সেটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বাধীন একটি দল। তাছাড়া ১ হাজার ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী কীভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটি নিয়েও অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। এই দলে ১২ জন আন্তর্জাতিক ও ১২ জন চীনা গবেষক থাকবেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্কে টাকা পোড়ানো হচ্ছে চীনে

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

ওডি/কেএইচআর