• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনা আতঙ্কে কাগুজে নোট পোড়ানোর সিদ্ধান্ত চীনে 

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:০৬
করোনা আতঙ্কে কাগুজে নোট পোড়ানোর সিদ্ধান্ত চীনে 
চীনের কাগুজে নোট (ছবি : প্রতীকী)

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৭৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। এমনকি পর্যবেক্ষণে রয়েছেন আরও তিন লক্ষাধিক মানুষ।

গোটা বিশ্ব যখন মহামারি ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বিগ্ন, ঠিক তখনই করোনা আতঙ্কে কাগুজে নোট পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং সরকার। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ফ্যান ইয়েফেইয়ের বরাতে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ফ্যান ইয়েফেই বলেছেন, ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ব্যবহৃত সকল কাগুজে নোট দ্রুতই নষ্ট করে ফেলা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এরই মধ্যে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এবার প্রায় ৬০ হাজার কোটি ইউয়ান নষ্ট করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের সব ব্যাংকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে।

নতুন জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়, চীনের কোনো ব্যাংকে এখন থেকে আর কাগজের নোট গ্রহণ করা হবে না। দ্রুত নতুন নোট বাজারে ছাড়া হবে। প্রক্রিয়াটি আগামী ১৪ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তাছাড়া নতুন নোট বাজারে ছাড়ার আগে তা পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করা হবে। আপাতত পুরনো মুদ্রা নিজেদের সংগ্রহেই রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ দিকে বেইজিং সরকারের আকস্মিক কাগুজে নোট পোড়ানোর সিদ্ধান্তে দেশে চরম অর্থসংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কেননা চিকিৎসার জন্য করোনায় আক্রান্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা যেসব কাগুজে নোট ব্যবহার করছিলেন, এখন থেকে সেগুলোর আর কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না।

বিশ্লেষকদের মতে, একজনের হাত থেকে মুদ্রাগুলো যাচ্ছে অন্যজনের হাতে। মূলত তা থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই পুরনো মুদ্রা, বিশেষ করে হাসপাতাল ও বাজারে ব্যবহৃত নোটগুলো সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যাংকের কোষাগারে রাখা শুরু করেছে চীন।

বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এমনকি সিঙ্গাপুরেও কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

করোনা ভাইরাস কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সেটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বাধীন একটি দল। তাছাড়া ১ হাজার ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী কীভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটি নিয়েও অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। এই দলে ১২ জন আন্তর্জাতিক ও ১২ জন চীনা গবেষক থাকবেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্কের মধ্যেই শুরু পঙ্গপালের তাণ্ডব

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

ওডি/কেএইচআর