• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘রিভার্সিং ডায়াবেটিস’ বা ডায়াবেটিসকে থামিয়ে দেওয়া; কতটা সম্ভব?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৪৩
রিভার্সিং ডায়াবেটিস
ছবি : প্রতীকী

রিভার্সিং ডায়াবেটিসের নাম তো নিশ্চয় শুনেছেন। এ ক্ষেত্রে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা নিজেদের রক্তে সুগারের পরিমাণ এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারেন যে, তাদের আর ওষুধ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই অবস্থাটা যে স্থায়ী কিছু তা নয়। তবে আপনি যদি চান, তাহলে একটা সময় বিনা চেষ্টাতেই হয়তো শুধু ওজন ও খাবার নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়বেটিসের টাইপ টু-কে হারিয়ে দিতে পারবেন।

এই পুরোটা ব্যাপারের পেছনে আপনার ডায়াবেটিস কত দিনের, কতটা বেশি এবং আপনার জিন- এই সবকিছুই নির্ভরশীল। আরও একটু জানতে চান রিভার্সিং ডায়াবেটিস সম্পর্কে? চলুন, জেনে নেওয়া যাক!

টাইপ টু ডায়াবেটিস কী?

রিভার্সিং ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক যে, টাইপ টু ডায়াবেটিস ব্যাপারটি কী। আমদের শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফ্যাট ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। যদি সেই ক্ষমতার এবশি ফ্যাট শরীরে থাকে তাহলে শরীরের কোষগুলো ইনসুলিন প্রতিরোধক হয়ে যায়। এই ইনসুলিন সুগারকে শক্তিতে পরিণত করে। এটি কাজ না করায় রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। তৈরি হয় টাইপ টু ডায়াবেটিস।

খাবারের মাধ্যমে কি টাইপ টু ডায়াবেটিস দূর করা সম্ভব?

খাবারের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা বলতে মূলত, ওজন না বাড়ানো এবং যথেষ্ট পুষ্টি পাওাকে বোঝায়। এমন সব খাবার আপনাকে এ ক্ষেত্রে গ্রহণ করতে হবে যেগুলো আপনার শরীরকে দুর্বল করে দেবে না। একইসাথে, আপনার ওজনও বাড়বে না। এই ক্ষেত্রে কিছু খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। এই যেমন-

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করার মধ্যে আপনি খেতে পারবেন- লাল বা বাদামি আটার রুটি, রুটি, বিস্কুট, নুডলস, স্প্যাগেটি ইত্যাদি। অন্যদিকে আপনি ভাত, সাদা রুটি, সিরিয়াল, প্যাস্ট্রি, পাস্তা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি খেতে পারবেন না।

প্রোটিনের ক্ষেত্রে আপনি খেতে পারবেন- টফু, বাদাম, মাছ, হাড়ছাড়া মুরগীর মাংস, দুধ, কম ফ্যাটের দই ও পনির। আপনি খেতে পারবেন না- লাল মাংস, মুরগির চামড়া, ভাজা মাছ ইত্যাদি। অনেক তেল দিয়ে রান্না করা কিছু নয়, চেষ্টা করুন সেদ্ধ, কাঁচা, অল্প রান্না করা খাবার বেশি করে খেতে। শাকসবজির ক্ষেত্রেও নিয়ম মেনে চলতে হবে আপনাকে। আপনি এ ক্ষেত্রে খেতে পারবেন- বাঁধাকপি, টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রোকলিসহ সবু সব শাকসবজি। খেতে পারবেন না খুব তেল মশলা দিয়ে রান্না করা সবজি, মশলাদার সালাদ ইত্যাদি। খাবারকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখুন।

ফলের মধ্যে সুগার থাকে। চেষ্টা করুন এমন সব ফল খেতে যেগুলোর সুগারের পরিমাণ অনেক কম। দিনে দুইবার ফল খান। অন্যদিকে, অনেক মিষ্টি দিয়ে জমিয়ে রাখা ফল, ফলের কোনো খাবার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।

আপনি ফ্যাটের কারণেই ভুগছেন। তবে ইচ্ছে করলে কিছু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আপনি গ্রহণ করতেই পারেন। এর মধ্যে রয়েছে বাদাম, বীজ, মাছ ইত্যাদি খাবার। তবে এড়িয়ে চলুন ভারী পনির, মাখন এবং সেসব খাবার যেগুলোতে অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট মজুদ রয়েছে।

খাবার তো গেল, কিন্তু পানীয়? পানীয়ের বেলায় ব্ল্যাক কফি, পানি, চিনিহীন চা বেছে নিন। চেষ্টা করুন সেইসব পানীয় থেকে দূরে থাকতে যেগুলো বেশ ঝাঁঝালো ও মিষ্টি। মিষ্টি তরল পানীয়, সেটা জ্যুস হোক কিংবা পেপসি, বা দুগ্ধজাত কিছু, এর সবটাই পরিহার করুন। খালি চোখে এই পানীয়গুলো আমাদের জন্য আরামদায়ক মনে হলেও এটি আমাদের শরীরের ওজন বাড়িয়ে দিতে অনেকটা বেশি সাহায্য করে।

হ্যাঁ, এই সবগুলো খাবারের প্রক্রিয়াই আপনাকে সাহায্য করবে রিভার্স ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে একটু একটু করে সুস্থ হতে। তবে, মজার ব্যাপার হলো, শুধু খাবার নয়, আপনাকে ডায়াবেটিসকে হারিয়ে দিতে হলে শরীরচর্চাও করতে হবে। আর এই সবকিছু একটা সময় আপনাকে ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করবেই!

মূল লেখক : সিয়াও ভি ভিয়েন, মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল।

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড