• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

আর্থিক সহযোগিতার অভাবে ধুঁকে মরছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো

  আহমেদ ইউসুফ, কুবি প্রতিনিধি

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:৩২
কুবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ডজনখানেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দিন দিন প্রাণহীন হয়ে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার আর্থিক বরাদ্দ এবং কতৃপক্ষের বিশেষ কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এমন ভঙ্গুর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৫টির অধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে বিতর্ক, কণ্ঠ চর্চা, অভিনয়, রক্তদান, সংগীত, প্রযুক্তিগত এবং সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন গঠনমূলক সংগঠনের কার্যক্রম চলমান। যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতীয় দিবসসহ সাংস্কৃতিক বিভিন্ন দিবসে কার্যক্রম পরিচালনা করা এমনকি নতুন নতুন উদ্ভাবন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাসমূহে অংশগ্রহণ ও পুরস্কার অর্জন করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবহেলিত এসব সংগঠনগুলো।

সম্প্রতি দেশের চতুর্থ মানব রোবট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সায়েন্স ক্লাব’ নামের একটি সংগঠনের হাত ধরেই তৈরি করা হয়। এর আগেও নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালঞ্জে প্রথম দিকের অবস্থানসহ দেশ বিদেশের নানা পুরস্কার এনে দিয়েছে সংগঠনগুলো। তবে এসব কার্যক্রমের জন্য ন্যূনতম কোনো অর্থ বরাদ্দ রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। যার ফলে সংগঠনের মৌলিক অনুষ্ঠানগুলো উদযাপনের জন্য নানান দরজায় হাত পাততে হয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের।

অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি মানুষের ধারে ধারে যাওয়া সবসময় সম্ভব হয়ে উঠে না। গেলেও প্রয়াজনীয় সহযোগিতা নিতে হেনস্তার শিকার হতে হয়। আর এর থেকে এক সময় সংস্কৃতি চর্চাতে সৃষ্টি হয় অনীহা। এভাবেই ধীরে ধীরে প্রাণহীন হয়ে পড়ছে এ সংগঠনগুলা। এছাড়া আর্থিক কোনো সহযোগিতা না করলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদন দিতেও নারাজ প্রশাসন। ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ফারিদ মুস্তাকিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক অংশগ্রহণ করতে বিতার্কিকরা যাতায়াত নিজে খরচ করলেও অনেক সময় রেজিস্ট্রেশনের টাকা দিতে হিমশিম খেতে হয় সংগঠনটিকে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কয়েকটি চ্যাম্পিয়ন ট্রফিসহ অনেকগুলো জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছে সংগঠনটির সদস্যরা। কিন্তু এতসব অর্জন থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে অনেক জাতীয় বিতর্কে অংশগ্রহণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

এ দিকে এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের সংগঠন উদীচি, মুহূর্ত থিয়েটার, প্রান্তিক কণ্ঠচর্চা কেন্দ্রসহ বেশ কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং অর্থের অভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এমন সঙ্কটে পড়ে ক্যারিয়ার ক্লাব, ফটোগ্রাফার সাসাইটিসহ আরও কিছু সংগঠনের কার্যক্রম এখন আর দেখা যায় না।

এসব বিষয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননশীলতার বিকাশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখে যা দিয়ে চলে তাদের বার্ষিক কার্যক্রম। কিন্তু কুবিতে দেখা যায় এর ব্যতিক্রম। ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষার্থী তহবিলে টাকা জমা দিতে হলেও তা শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মকাণ্ডে খরচ করছে না প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা এসব সংগঠনগুলো তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে না খোদ প্রশাসন। আবার কখনো কখনো নিজস্ব অর্থায়নে জাতীয় পর্যায়ের কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গেলেও অডিটোরিয়াম না থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আদনান কবির সৈকতসহ বেশ কয়েকজন সাংস্কৃতিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ সংগঠনগুলো আমরা তিলে তিলে দাঁড় করিয়েছি। কিন্তু আজ অর্থ ও প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সংগঠনগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। জতীয় দিবসগুলোতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল কেনার টাকাও থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে এ সংগঠনগুলো একদিন প্রাণ হারাবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে খাত সৃষ্টি করে অর্থিক সহযোগিতার মধ্যমে সংগঠনগুলোকে বাঁচানো যায়।

প্রশাসনের অসহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের জানান, আসলে আমরা ওইভাবে চিন্তা করিনি। তবে এবার উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে এসব সংগঠনগুলোকে সহযোগিতা করার একটা উপায় বের করব।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড