হাবিপ্রবির ঘটনায় ইউজিসি বরাবর শিক্ষামন্ত্রীর চিঠি

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রমজান আলীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন।

ওই চিঠিতে এসব ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। এর প্রেক্ষিতে গৃহীত পদক্ষেপ ও অভিযোগের তথ্য জরুরিভিত্তিতে পাঠানোর জন্য ইউজিসি হাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দিয়েছে।

এছাড়া গত ২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো ইউজিসির চিঠিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে সহকারী অধ্যাপক রমজান আলীর বিরুদ্ধে উপাচার্য কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তাও জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত বছরের ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯ জন প্রভাষক, ১৬ জন কর্মকর্তা ও ২২ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। অভিযোগে বলা হয়, সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি লিখিত, মৌখিক ও প্রদর্শনী ক্লাস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত হয়েও যোগ্য ও মেধাবীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এমনকি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়া প্রার্থীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া ২২ জন কর্মচারী নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ১৬ জন কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও ২২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম।

এ প্রসঙ্গে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। অথচ এর কিছুই হয়নি। তাহলে কীভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে।

অন্য দিকে গেল বছরের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রমজান আলীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী। পরে ছাত্রী ও রমজান আলীর স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি রমজান আলীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির যথাযথ প্রমাণ পায়। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে রমজান আলীকে চাকরি থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করলেও তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়নি হাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্য দিনাজপুর মহিলা পরিষদের সভাপতি কানিজ রহমান অভিযোগ করে জানান, ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দায়ী একজন শিক্ষককে বাঁচাতে প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে।

এ দিকে ইউজিসির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফজলুল হক। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে কোনো সময়সীমা উল্লেখ নেই। তবে যত দ্রুত ইউজিসির চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করা হবে।

ওডি/আরএআর