মোহাম্মদ রনি খাঁ, গণবি প্রতিনিধি
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে পরিচালিত ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (বিপিটি) কোর্সটি নিজস্ব এবং স্বতন্ত্র ফিজিওথেরাপি কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির দাবিতে স্মারক লিপি প্রদান ও মানববন্ধন করেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদাম তলায় এ বিভাগের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড, বিভাগীয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে ৬ দফা দাবিসহ স্মারকলিপি প্রদান করে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন ২০০৩ এ বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোনরূপ মেডিকেল/ডেন্টাল ফ্যাকাল্টি অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত কোন কোর্স যেমন- ফিজিওথেরাপি পরিচালনা করা যাবে না।
ফিজিওথেরাপিষ্টদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের আইন ২০১৮ এর ১৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘ফিজিওথেরাপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হতে হবে’।
প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এ বলা হয়েছে, ‘কোনো কোর্স চালু করিবার ক্ষেত্রে যদি অন্য কোন আইনের অধীন প্রণীত কোন বিধি-বিধানে অন্য কোন সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ বাধ্যতামূলক হয় তাহা হইলে উক্ত সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।’ তবে, এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরাই ফিজিওথেরাপি কোর্স চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বেশ কয়েকবার জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিবিএস, বিডিএস, ফিজিওথেরাপি পরিচালনা বন্ধ করতে গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যা বর্তমান ও সাবেক সকল শিক্ষার্থীদের মনে চরম উৎকণ্ঠা ও আতংকের সৃষ্টি করেছে এবং একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সামাজিক এবং চাকুরি ক্ষেত্রে চরম হেয় প্রতিপন্ন ও হেনস্তার শিকার হচ্ছে।
তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ফিজিওথেরাপি কোর্সের শিক্ষার্থীদের দাবি- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এবং রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে ফিজিওথেরাপি কোর্স পরিচালনা করতে হবে তথা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করতে হবে।
ফিজিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. নাসিমা ইয়াসমিন (পিটি) বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরা আজকেই স্মারকলিপি হাতে পেলাম। দ্রুতই আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে আলোচনায় বসবো।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ১৬ নভেম্বর গণ বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা, ১৯৯২ (নম্বর ৩৪)-এর অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কাছে আবেদন করা হয়। এর তিন দিন পর বিমক/সাঃ/২৯৩/৯৫-২২৪৩ নম্বর মেমো সংশ্লিষ্ট পত্র মারফত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয় ইউজিসি।
এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হলে ১৪/১৩ বেঃ বি-১/৯৫/১২৫ শিক্ষা মেমো নম্বর সংশ্লিষ্ট পত্র মারফতে অনুমোদন দেওয়া হয়। গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়ার সময় ইউজিসি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের অধীন এমবিবিএস, বিডিএস ও ফিজিওথেরাপি এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিবিএ ও পরিবেশ বিজ্ঞানের অনুমোদন দেওয়া হয়।
শুভঙ্করের ফাঁকি আর কত? (ছবি : দৈনিক অধিকার)
কিন্তু ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল ইউজিসি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস, বিডিএস, ফিজিওথেরাপি, বিবিএ ও পরিবেশ বিজ্ঞান কোর্সের অনুমোদন নেই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ মে গণ বিশ্ববিদ্যালয় হাইকোর্টে একটি রিটি পিটিশন দায়ের করে। ওই রিটের ওপর ভিত্তি করে হাইকোর্ট ডিভিশন ইউজিসির দেওয়া নোটিশে স্থগিতাদেশ আরোপ করে। গত বছরের ২৬ নভেম্বর এ স্থগিতাদেশ ফের বর্ধিত করা হয় ও এ আদেশ ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২০ জুলাই) গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড