• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নোবিপ্রবিতে সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিনিময় সভা

  নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

১৩ মে ২০১৯, ২০:১৩
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিনিময়
সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিনিময় সভা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ‘সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড’ নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৩ মে) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে উপাচার্যের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরগুলোর সার্বিক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করায়, প্রকৃত সত্য ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পারস্পরিক মতবিনিময় করেন তিনি।

উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান বলেন, ‘উপাচার্য হিসেবে ২০১৫ সালের ২ জুন যোগদানের পর থেকে নোবিপ্রবির অ্যাকাডেমিক ও ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে গিয়েছে।’ উপাচার্য হিসেবে তার এই সময়কালে বাস্তবায়ন করা হয়েছে অনেক প্রকল্প, নির্মাণাধীন রয়েছে বহু প্রকল্প এবং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও অনেক।

অ্যাকাডেমিক গতি ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে এখানে নতুন ৪টি অনুষদ ও ১৪টি বিভাগ খোলা হয়। যাতে করে এ অঞ্চলসহ গোটা দেশের আরও বেশি সংখ্যক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীরা নোবিপ্রবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। পাঁচশত ৫০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল নির্মাণ ও ৬৫০ জন নারী শিক্ষার্থীর আবাসনের জন্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব হল নির্মাণ করা হয়েছে। ৪ তলা বিশিষ্ট আধুনিক লাইব্রেরি ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। দশ তলা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তৃতীয় অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। দশ তলা বিশিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তা টাওয়ার, হাউজ টিউটর, স্টাফ কোয়াটার ও প্রভোস্ট টাওয়ার নির্মাণাধীন। তিন তলা মেডিকেল সেন্টার ও কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণাধীন। এছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপাসনালয় নির্মাণের কাজ চলছে। সম্প্রতি বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে ও এর কাজ চলমান।

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, ‘দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা সহায়ক বৃত্তি’ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মাঝে ত্রিশ লক্ষ টাকার ‘বঙ্গবন্ধু সহায়তা ফান্ড’ চালু করা হয়েছে।’

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। আমার স্ত্রী অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক ও আমাদের একজন কন্যা সন্তান উদয়ন বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরিবার পরিজন রেখে এত দূরে নোবিপ্রবি’তে এ চারটি বছর দিনরাত পরিশ্রম করেছি। আমি আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের কাছে শোকর আদায় করি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশ সেবার এ মহৎ কাজ করার সুযোগ পাবার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, সম্প্রসারণ ও সংস্কার এবং বিশ্বমানের নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা অর্থাৎ নোবিপ্রবিকে একটি উন্নত, আধুনিক ও বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য যেসকল উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন তার সবকিছুই আমি করেছি।’

উপাচার্য বলেন, ‘সংবাদ প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক যে তদন্ত কমিটির (নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান কর্তৃক ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা, স্মারক: ০৩.০৭৯.০১৬. ০৪.০০.২০.২০১৪-১৬০, তারিখ : ২০ মার্চ ২০১৬) তদন্তের কথা বলা হয়েছে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। সেখানে উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক নয় এবং উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা যায় মর্মে নিষ্পত্তি করা হয় যার স্মারক নম্বর ইউজিসি/পাব:বিশ্ব:/৪৫৩(তদন্ত)/২০১৬/৯১০০, তারিখ ০৫/১২/২০১৬। এই নিষ্পত্তি কৃত শাহনাজ সামাদ (উপ সচিব) স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয় মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করেন যার স্মারক নম্বর শিম/শা: ১৯/নোঃবিঃপ্রঃবি-৫/২০০৭/৩, তারিখ : ০২ জানুয়ারি ২০১৭। অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান কে ই একই অভিযোগ দিয়ে বিভিন্নভাবে বারবার হয়রানি করা হচ্ছে যা সকলের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে আমি মনে করি।’

পত্রিকার প্রতিবেদনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ স্থগিতাদেশ দেয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ কাজ অব্যাহত রাখার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। প্রকৃত অর্থে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রেরিত চিঠি পাওয়ার পর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নিয়োগ কর্মকাণ্ড চলেনি। শুধুমাত্র গেল শনিবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত ৪৬ তম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউজিসি অনুমোদিত ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপিত পদের বিপরীতে ৫০ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। প্রায় ২০০ (দুইশত) পদে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের (কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদ-১৭১টি) বিভিন্ন পদে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিলো। কর্মকর্তা নিয়োগে বহিস্থ সদস্য হিসেবে আছেন জাবি’র সাবেক উপাচার্য ও পিএসসি’র সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির। তিনি নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডেরও একজন অন্যতম সদস্য। তার উপস্থিতিতে বাছাই বোর্ড বসানোর জন্য ২৫-২৬ এপ্রিল তারিখে সিলেকশন বোর্ড ডাকা হয়েছিলো। মন্ত্রণালয়ের আভাস পেয়ে অধিকাংশ সিলেকশন বোর্ড বাতিল করা হয়। বিভিন্ন তারিখে অনুষ্ঠিত বাছাই বোর্ডের সুপারিশ ক্রমে ২৭ এপ্রিলের রিজেন্ট বোর্ড এ ৫০ জনকে নিয়োগ দেয়।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান ব্যক্তি জীবনে শতভাগ সৎ ও নিষ্ঠাবান। তাঁর সারা জীবনে অদ্যবধি কেউ এক টাকার দুর্নীতির প্রমাণ করতে পারেনি এবং পারবেও না।’

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন- নোবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউছুফ মিঞা, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আতিকুল ইসলাম, আইআইটির পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ভূঁইয়া, আইআইএসের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মমিনুল হক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. গাজী মো. মহসীন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন, প্রক্টর ড. মো. রোকনুজ্জামান সিদ্দিকী, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, নোবিপ্রবি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও নোয়াখালী জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস সাংবাদিকবৃন্দ।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড