• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৬ বছরেও স্নাতক শেষ হয়নি জাবির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের

  আরিফুল ইসলাম আরিফ, জাবি প্রতিনিধি

২৫ মার্চ ২০১৯, ১২:৩১
জাবি
জাবির ফার্মেসি বিভাগ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ভর্তির ছয় বছর পার হয়ে গেলেও এখনও স্নাতক শেষ করতে পারেনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের (৪২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষক রাজনীতি আর গ্রুপিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। পাঠ দান, পরীক্ষার ফল প্রকাশ আর গবেষণার চেয়ে শিক্ষক রাজনীতিই মুখ্য হয়ে উঠেছে বিভাগটিতে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চারটি ক্লাসরুম আর সাতটি ব্যাচ নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ। সাতটি ব্যাচে অন্তত ৪৫০ জন নিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছে। বিভাগে নেই কোনো সমৃদ্ধ পাঠাগার কিংবা গবেষণাগার। সর্বশেষ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে প্রায় একযুগ আগে। এভাবেই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে বিভাগটি। এরই মধ্যে বাড়তি সংকট তৈরি করছে শিক্ষক রাজনীতি। শিক্ষকদের একাধিক গ্রুপের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। প্রায় প্রতিটি ব্যাচে অন্তত ছয় মাস থেকে রয়েছে এক বছরের সেশনজট। আর এ সীমাও ছাড়িয়েছে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের বেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর অর্ধ যুগ অতিক্রম করলেও স্নাতক শেষ হয়নি তাদের।

জানা যায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফার্মেসি বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। শিক্ষক রাজনীতি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে পিছিয়ে যায় ক্লাস-পরীক্ষা। প্রায় দেড় বছর পরে শেষ হয় তাদের প্রথম বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় সংকট কাটিয়ে উঠলেও সংকট কাটেনি ফার্মেসি বিভাগের। অনার্স কোর্সের প্রত্যেক বর্ষে অন্তত আট মাস বিলম্বে ফল প্রকাশ হওয়ায় কমছে না সেশনজট। সর্বশেষ স্নাতক চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা শেষ হয় গত বছরের ২৮ নভেম্বর। লিখিত, ব্যবহারিক ও ভাইবা শেষ হলেও আটকে আছে ফল। পরীক্ষা পরবর্তী ৭৫ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের নিয়ম থাকলেও অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম বর্ষের ‘প্রজেক্ট রিপোর্ট’ জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গেল বছরের ২৪ নভেম্বর। এ দিকে, জমা দেওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও অধ্যাপক এ. ওয়াই. শেখ ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন তাদের অধীনস্থ শিক্ষার্থীদের রিপোর্টে স্বাক্ষর করেননি। পরবর্তীতে সময় অতিক্রমের প্রায় দুই মাস পর ২০ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা রিপোর্টে স্বাক্ষর নিতে সময় বৃদ্ধির জন্য পরীক্ষা কমিটির কাছে অনুরোধ করে। ওই অনুরোধের প্রেক্ষিতে পরীক্ষা কমিটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের স্বাক্ষর ছাড়াই ‘রিপোর্ট’ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের স্বাক্ষর ব্যতীত ‘রিপোর্ট’ জমা দেওয়ায় তৈরি হয় নতুন সংকট। পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষর না থাকায় ‘রিপোর্ট’ মূল্যায়ন ও নম্বর প্রদানে অস্বীকৃতি জানান সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষকরা। আর রিপোর্টের নম্বর জমা না হওয়াতেই আটকে আছে বিভাগের ৫৯ শিক্ষার্থীর ফল।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘রিপোর্ট মূল্যায়নে সময় দেওয়া না দেওয়া মূল বিষয় নয়। বরং শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে।’

বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন বলেন, ‘এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটি সমস্ত দায়-দায়িত্ব নেবে। পরীক্ষা ও ফল সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।’

এ ব্যাপারে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. সাকিনা সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে এক ধরনের জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। ফল প্রকাশের সম্ভাব্য কোনো তারিখ বলা যাচ্ছে না।’

ফল প্রকাশে বিলম্বের বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. অসিত বরণ পাল জানান, ‘বিভাগে শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলার কারণে ফল আটকে আছে। বিষয়টি এখন আর আমার হাতে নেই। ফল প্রকাশে আরও বিলম্ব হতে পারে। পরবর্তী অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড