• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বছরে জবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

  রিদুয়ান ইসলাম

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:৫১
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। (ছবি: সংগৃহীত)

২০২০ সাল! শুনলেই যেন, জনমনে একটা আতংকের ভাব চলে আসে৷ আধুনিক যুগের মহামারী করোনার জন্য সবকিছু থমকে গিয়েছে, পাল্টে দিয়েছে সবকিছু। বছরটি যে শুধু সবকিছু বদলে দিয়েছে তাই নয়, অনেক কিছু বদলানোর প্রয়োজনীয়তাও আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। বিগত বছরগুলো থেকে খুবই আলাদা এই বছরটি।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সকল শিক্ষার্থীরাই বাড়িতে বসে অবসর সময় কাটিয়েছেন। অনুধাবন করেছেন নতুন কিছু। কীভাবে হঠাৎ কোনো দুর্যোগ আসলে তা মোকাবিলা করা যায়। আর কীভাবে কাটানো উচিত আমাদের সামনের বছর। অনেক শিক্ষা দিয়েছে আমাদেরকে এই মহামারী করোনা ভাইরাস। মহামারি থেকেও যে শিক্ষা নেওয়া যায় সেটা সবাই অনুধাবন করেছে।

এসব বিষয়ে কি ভাবছেন শিক্ষার্থীরা? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাবনায় তা তুলে ধরেছেন রিদুয়ান ইসলাম।

অপ্রাপ্তি গুলোই অজানার পুঁজি

২০২০ সালের সময়গুলো এভাবে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে কাটাতে হবে আমাকে ভাবিনি। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকট এতো তীব্রভাবে আমাদের গ্রাস করবে সেটা আমার মতো সকল শিক্ষার্থীদের অজানা ছিল। তবে, ২০২০ সালে জীবনে নতুন অনেক অভিজ্ঞতার অর্জন হয়েছে যা হয়তো অন্য কোনো সময়ে সম্ভব হতো না এবং আমরা এমন কিছু নতুন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা শব্দের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেছিও বটে। এই বছরের সকল অপ্রাপ্তি গুলোকে পুঁজি করে আগামী বছরে পূরণ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। পড়াশোনার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের সামাজিক কাজে নিজেকে জড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে যেমনি বন্ধুদের সাথে আড্ডা বাজি ছিল আগামী বছরগুলোতে তা ধরে রেখে নতুন প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবো।

মো. মিলন হোসেন শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ

সচেতনতায় সতেজ হতে হবে

জীবন নামক ক্ষুদ্র গ্রন্থের বিরল এক অধ্যায়ের নাম করোনার বছর। ঝরা পালকের মত একটি বছর যেন, আমাদের জীবন থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিশ্বকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল। সবকিছু থমকে গিয়েছে। অনেক কিছু দিয়েছে, নিয়েছে, শিখিয়েছে এই ২০২০ সালটি। করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই৷ করোনো আমাদের নতুনভাবে মানুষের প্রতি সহযোগিতার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা, বন্ধন বৃদ্ধির দৃঢ় আভাস দিয়েছে। তারপরও বলতে হয় প্রযুক্তি আর চিকিৎসা ক্ষেত্রগুলো আরও অগ্রসর হওয়া উচিত। আশা করা যায় নতুন বছর থেকে আমরা খুব ভালো সচেতনতার পরিচয় দিয়ে এর মোকাবিলা করতে পারবো। এবছরে যা হবার হয়ে গেছে তা নিয়ে আর না ভেবে এখন আমাদের উচিত সামনের বছর সাদরে গ্রহণ করা। নতুন কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা।

মিতালি আক্তার শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

ব্যতিক্রম অধ্যায়ের নাম ২০২০

সময়ের আবর্তনে, কালের বিবর্তনে আজ আমরা আবর্তিত। মৃদু শীতের রেষকে উপেক্ষা করে মহামারী আর শঙ্কার উত্তাপ যেন গোটা পৃথিবীকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে অল্প সময়ের ব্যবধানে। দেখিয়ে দিয়ে গেছে প্রকৃতির রূপ। করোনা ভাইরাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, পরিবেশে অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। যেখানে মানবজাতির অসহায় আত্মসমর্পণ ফুটে উঠেছে। এই ছোট জীবনের ব্যতিক্রম এক অধ্যায়ের নাম ২০২০ সাল। নতুন নতুন অভিজ্ঞতায় মিশে আছে এ বছরটি। মহামারী করোনা ভাইরাস আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছুই নিয়ে গেছে। সবচেয়ে মহামূল্যবান সময়টুকুই বেশি নিয়েছে। দিয়েছে বলতে শুধুই শিক্ষা। যে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনের দিনগুলোতে আরও ভালো ভাবে জীবনযাপন করতে পারবো। এখন আমাদের মনে এমন একটা সাহস জুগিয়েছে, যার মাধ্যমে সামনের যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারবো। আর সামনের দিনগুলোর জন্য আমাদের অভিলাষ হবে যেন, এমন কোনো মহামারীর সময়ে আতংকিত না হয়ে সচেতনতার মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করতে পারি।

রিফাত জাহান শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ

ক্ষণস্থায়ী জীবনের অভিযোগ ও প্রত্যয়

জীবন সেতো পদ্ম পাতার জল। একদমই ক্ষণস্থায়ী। প্রতিনিয়তই ক্ষণস্থায়ী জীবনের এক একটি পৃষ্ঠা বদল হচ্ছে। পাওয়া না পাওয়ার অভিযোগ কে পিছনে ফেলে ভাবনার নতুন প্রত্যয় কে জাগ্রত করে বরণ করে নিয়েছিলাম ২০২০ কে। নতুন কিছু করার স্বপ্ন, ছিল প্রিয়জনের পাশে থাকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ছিল। পরিচিত মানুষগুলোর মুখে এক টুকরো হাসি ফোটানোই ছিল মূল লক্ষ্য। জীবন নদীর শান্ত গতিপথ হঠাৎ যেন আটকে যায় করোনা নামক ভাইরাসের বাকেঁ। তাই আজও প্রতিটি মানুষ তীব্র মানসিক হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। যাই হোক, সময় প্রবহমান। কালের বিস্তারে আবারও এক নতুন দিগন্তের পথে আমরা সবাই ডানা মেলব আগত ২০২১ এ, এই হোক সবার মনের একান্ত আবেদন। আশা করি, স্বপ্ন তখন নতুন বছরে নতুন করে জাগ্রত হবে। নতুন করে আবারও সবাই ভালোবাসার উষ্ণতা ছড়িয়ে দিবে সবার মনে। দূরত্বের গতিপথে দেখা দিবে আকাল। সকলে তাদের প্রিয়জনের পাশে থেকে তাদের মুখে হাসি ফুটাবে। মনের কোণে এই প্রত্যয়ই ব্যক্ত করে আগমন জানাই ২০২১ কে। ২০২১ হোক সবার জন্য আশীর্বাদপূর্ন বছর।

সানজিদা মাহমুদ মিষ্টি শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

দোলনার দোলে ২০ নাচে

শরৎ, বসন্ত, গ্রীষ্ম সে যেনো এক করে দিয়েছে করোনাকালীন এ বিশ্ব। প্রাদুর্ভাবের পরিসংখ্যান বলছে এর কবল থেকে যেনো শীতও রেহাই পাবেনা। ২০২০ সাল যেনো চিরস্মরণীয় করে দিয়ে গেলো মন্দের ভালোতে। উষ্ণতা, শীতলে, অমাবস্যা, পূর্ণিমাতে আকাশের রং গোণা যায়নি বলে পুরো বছরেই উদ্বিগ্ন, বিস্ময় আর হাহাকারে কেটেছে। তবে সব কিছুরই ভালো-মন্দ দিক আছে। সব মিলিয়ে তাই ২০২০ কে বিচিত্রের নায়ক বললেও নেহাত ভুল ধরবার জন্য কলাম লিখবেন না নিশ্চয়ই। তাই যেভাবেই গেছে, তা মেনে নিয়ে। ২০২১ কে মনে নিতে চাই, দৃঢ়, প্রত্যয় নিয়ে গগনের চাঁদের পানে ছুটে, মহামারি কাটিয়ে স্বপ্ন বিলাস হয়ে স্বপ্নদ্রষ্টা হয়ে, এ জাতি, দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গী করে, পরিচিত হতে চাই বিশ্বের কাছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড