• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স বন্ধের সুপারিশ

  ঢাবি প্রতিনিধি

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৩৬
ঢাবি
কার্জল হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে পরিচালিত সব ধরনের সান্ধ্য কোর্সের ভর্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধের সুপারিশ করেছে যৌক্তিকতা যাচাই কমিটি।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল) সভা অনুষ্ঠিত হবে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সান্ধ্য কোর্সের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা যায়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সান্ধ্য কোর্স চালু রয়েছে। মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট, ট্রেনিং কোর্সসহ অনিয়মিত এসব কোর্সের সংখ্যা ৬৯টি। এর মধ্যে ৫১টি মাস্টার্স, ৪টি ডিপ্লোমা, ৭টি সার্টিফিকেট আর ৪টি ট্রেনিং কোর্স। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কোর্সের বাইরে ১০৫টি ব্যাচে এসব কোর্সে ৭ হাজার ৩০২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তাদের ক্লাস নেন ৭২৫ জন শিক্ষক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য জানান, সান্ধ্যকোর্স পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। সেই নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত সব সান্ধ্যকোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে এ ধরনের কোর্স চালু করতে হলে সেটি অবশ্যই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করতে হবে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চাপে গত বছরের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের ডিনদের নিয়ে এই বিষয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সান্ধ্য কোর্সের কড়া সমালোচনা করার পর উপাচার্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছিলেন।

কমিটিতে থাকা চার ডিন সান্ধ্য কোর্সের বিষয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় সুপারিশ করতে গিয়ে সান্ধ্য কোর্সের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছেন। তবে এ বিষয়ে ‘ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি’ পোষণ করেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। তার অনুষদের ৯টি বিভাগের প্রতিটিতেই সান্ধ্য কোর্স আছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব কোর্সে প্রতিবছর ৪৫টি ব্যাচে ২ হাজার ৯৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এসব কোর্সে ক্লাস নেন ২৩০ জন শিক্ষক।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ইনস্টিটিউটের সান্ধ্য কোর্সসহ অনিয়মিত কোর্সে প্রতিবছর ২ হাজার ৫৬২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তাদের ক্লাস নেন ১৭৯ জন শিক্ষক। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১১টি বিভাগে সান্ধ্য কোর্সসহ অনিয়মিত কোর্সে বছরে ৯১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তাদের ক্লাস নেন ১৮৬ জন শিক্ষক। কলা অনুষদের ৩টি বিভাগে এ ধরনের কোর্সে বছরে ৫২৫ জন ভর্তি হন। তাদের ক্লাস নেন ৫৭ জন শিক্ষক। এ ছাড়া আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স ও সার্টিফিকেট কোর্সে বছরে ১৮০ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তাদের ক্লাস নেন ২৩ জন শিক্ষক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সার্টিফিকেট কোর্সে বছরে ভর্তি হওয়া ৪০ শিক্ষার্থীর ক্লাস নেন ২৩ জন শিক্ষক।

পর্যালোচনা কমিটি জানান, এসব কোর্সে ভর্তির নির্ধারিত ন্যূনতম যোগ্যতার বিষয়টি কোনো কোনো বিভাগ ও ইনস্টিটিউট পরিচালিত কোর্সে অনুসরণ করে না। ভর্তি পরীক্ষায় সমন্বয়ক হিসেবে ইএমবিএ ছাড়া অন্য সব কোর্সে অনুষদগুলোর ডিনদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কোর্সগুলোতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-উপস্থিতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নগণ্য।

আরও পড়ুন : ঢাবিতে সমাজকল্যাণ ডিবেটিং ক্লাবের নতুন কমিটি

স্বল্প উপস্থিতির জন্য নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য উপাচার্যের অনুমতি লাগে, তবে এটা মানা হয় না। সান্ধ্য কোর্সের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, পরীক্ষা গ্রহণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, টেবুলেশন ইত্যাদি সব কাজই সংশ্লিষ্ট বিভাগে সম্পন্ন হয়। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তা ছাড়া এসব কোর্সের কাজের সম্মানীর হার বিদ্যমান হার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বিভাগের নিজস্ব সিদ্ধান্তে পরিচালিত।

সান্ধ্য ও অনিয়মিত কোর্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনুমোদিত একটি কেন্দ্রীয় নীতিমালা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিটি।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড