• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সমাবর্তনের অপেক্ষায় জবির ১৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট

  জয়নুল হক, জবি প্রতিনিধি

০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:২৯
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর ১ম বারের মতো সমাবর্তনের আয়োজন করতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। আগামী ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলায় এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।

এ উপলক্ষে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গফুটের বিশালাকৃতির প্যান্ডেল নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমবেত হবেন। সমাবর্তন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। পুরো ক্যাম্পাসকে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে।

প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবন নতুন করে রঙ করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছে ফুলের গাছ।

এছাড়াও সমাবর্তনের দিন ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও থাকছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সঙ্গে কন্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার মঞ্চ মাতাবেন। প্রথম সমাবর্তনকে সামনে রেখে ইতিহাসের সাক্ষী হতে প্রস্তুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটের সমাবর্তন প্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েটদের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদেরকে সমাবর্তন বা কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সনদ প্রদান করে আসছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা বরাবরই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাবর্তন দিতে হবে বলে বিভিন্ন সময় আন্দোলনও করেছেন।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের জোর আন্দোলনে টনক নড়ে প্রশাসনের। প্রথম সমাবর্তন আয়োজনের জন্য সমাবর্তনের স্থান, সময় ও পরিকল্পনাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সুপারিশ করার লক্ষ্যে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমানকে আহ্বায়ক এবং প্রশাসন ও অ্যাকাডেমিক অ্যান্ড কাউন্সিল শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে সদস্য-সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাবর্তনের আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নির্ধারণ করে উপাচার্য বরাবর সুপারিশ প্রদানের জন্য কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এরপর ২০১৯ সালের ১ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। এবারের সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি ও সান্ধ্যকালীন ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা যারা অন্তত একটি ডিগ্রি জবি থেকে অর্জন করেছে তারাই অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে স্নাতক ১১ হাজার ৮৭৭ জন, স্নাতকোত্তর ৪ হাজার ৮২৯, এমফিল ১১, পিএইচডি ৬ ও ইভনিং প্রোগ্রামের ১ হাজার ৫৭৪ জন অংশ নেবেনে। এর মধ্যে ছেলে ১৩ হাজার ৭৬২ ও মেয়ে ৪ হাজার ৫৫৫ জন।

যারা সুযোগ পেয়েও এ বছর সমাবর্তনে অংশগ্রহণ-আবেদন করেনি তারা আর কখনও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। সমাবর্তন উপলক্ষে ১৮ হাজার ৩১৭ জন শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট তৈরি করতে হচ্ছে। তবে সমাবর্তনে একজন শিক্ষার্থী কেবল একটি সনদের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক ডিগ্রি অর্জনকারীরা সমাবর্তনের পর ডিগ্রির সনদ তুলতে পারবেন। সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া সমাবর্তন গাউন শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে হচ্ছে না।

এছাড়া সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটরা ৭, ৮ ও ৯ জানুয়ারি অফিস চলাকালীন (সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা) সময়ে স্ব-স্ব বিভাগ হতে কস্টিউম, ব্যাগ ও গিফট সংগ্রহ করতে পারবেন।

এছাড়াও গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের দিন (১১ জানুয়ারি) বিকাল তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত, ১২ জানুয়ারি ও ১৩ জানুয়ারি সকাল নয়টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত স্ব-স্ব বিভাগ হতে মূল সনদ গ্রহণ করতে পারবেন। উল্লেখিত তারিখের মধ্যে কেউ সনদ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে মূল সনদ গ্রহণ করতে পারবে। জবির প্রথম সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এমিরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক।

সমাবর্তন ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও বিএনসিসি, রোভার স্কাউটদের প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় ১১ জানুয়ারি পুরান ঢাকা থাকবে লোকারণ্য। বাড়তি চাপ সামলাতে এই এলাকায় ভারি যান চলাচল বন্ধ করতে পারে ট্রাফিক পুলিশ। এদিকে সমাবর্তন স্থলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের চাপ সামলাতে সকাল ৮টা থেকেই ভেন্যুতে প্রবেশ করতে পারবে আগত গ্র্যাজুয়েটরা। বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হবে।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের একটা নৈতিক অধিকার। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় সচেতন। বিভিন্ন জটিলতার কারণেই এতদিন সমাবর্তন করা সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় একটি সফল ও পরিপূর্ণ সমাবর্তন উপহার দিতে পারবো বলে আশা করছি।’

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড