• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পর আলোচনায় খুবি উপাচার্যের নিয়োগ বাণিজ্য!

  ক্যাম্পাস ডেস্ক

১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:২৫
খুবি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিম্নমানের কাজসহ ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাটের রেশ না কাটতেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্যের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে ডিন ও বিভাগীয় পদে অযোগ্যদের পাশাপাশি নিজের আত্মীয়স্বজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সব নিয়োগই স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা যায়, আইন অনুষদের বর্তমান ডিন ও প্রধান আইন বহির্ভূতভাবেই নিয়োগ পেয়েছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, অধ্যাপক হতে গেলে ‘সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অন্তত ৪ (চার) বছরের শিক্ষকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা’ থাকতে হবে। কিন্তু আইন বিভাগের প্রধান ওয়ালিউল হাসনাতের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে মোট অভিজ্ঞতা মাত্র ৩ বছর ৬ মাস ৭ দিন। এর সঙ্গে তার লিয়েন কার্যকালকে (১০ মাস ১৪ দিন) অভিজ্ঞতা হিসেবে গণনা করে মোট অভিজ্ঞতা দেখানো হয়েছে ৪ বছর ৪ মাস ২১ দিন। অথচ খুবিসহ বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই লিয়েনকে চাকরিকালীন বাস্তব অভিজ্ঞতা হিসেবে গণনার বিধান নেই।

পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের অনিয়ম ঘটেছে। খুবির বিধি অনুযায়ী অধ্যাপক হতে গেলে মোট ২৫ বছরের শিক্ষকতা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও তা নামিয়ে ২০ বছরে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে অধ্যাপক হতে ন্যূনতম ১০টি প্রকাশনার কথা বলা থাকলেও সেখানে মাত্র ৫টি প্রকাশনা চাওয়া হয়েছে। আর এমন শিথিলকৃত যোগ্যতার ভিত্তিতেই পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক উত্তম মজুমদারকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এত কম যোগ্যতা নিয়ে খুবির ইতিহাসে আর কেউ অধ্যাপক পদে নিয়োগ পাননি।

অন্যদিকে ইতিহাস ডিসিপ্লিনের প্রভাষক মো. হাফিজ আহমেদকে তালিকার ৫৯ নম্বর থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ তার আগে থাকা সব প্রার্থীরই শিক্ষাজীবনের সব পর্বে প্রথম শ্রেণি ছিল। অনেকেই ছিলেন পি.এইচ.ডি. ডিগ্রিধারী। মান অবনমন করে এমন নিয়োগও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিরল।

এছাড়াও খুবিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে উপাচার্যের উন্মুক্ত স্বজনপ্রীতি দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত মো. ইউসুফ রায়হান (ভাগ্নে), মো. জামাল মিয়া (ফুপাতো ভাই), মো. আবু সাঈদ (ভাগ্নে), রুবেল হাসান (ভাগ্নে), সৈকত মাহমুদ (ভাইপো), আসাদুর রহমান (মামাতো ভাই), নাজমুল ইসলাম (ভাইপো), মো. সফিকুল ইসলাম (ফুপাতো ভাই), নজরুল ইসলাম (চাচাতো ভাই) উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাদের পাশাপাশি মো. আনিছ, পলাশ, মো. রাজু কাজী, ইব্রাহীম মোল্লা, সুজন খানও উপাচার্যের আত্মীয় বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে ল্যাব সহকারী (উপাচার্যের ভাইপো) সৈকত মাহমুদ চুরি করে ধরাও পড়েছেন।

দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষেত্রে এ রকম লাগামহীন অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির তথ্য প্রকাশে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ স্থানীয় শিক্ষাবিদরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এটিএম গোলাম কুদ্দুস দাবি করেন, সবগুলো নিয়োগই যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে। এখানে কোনো চাতুরীর বিষয় নেই, নেই স্বজনপ্রীতিও।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড