• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

ভর্তিচ্ছুদের দাবি আদায়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রজোট এক কাতারে

  মাহবুব এ রহমান, চবি প্রতিনিধি

১১ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৫১
চবি
মানববন্ধন কর্মসূচি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে মানোন্নয়ন দিয়ে মেধাতালিকায় নাম আসা শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য কয়েকদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন ভর্তিচ্ছুরা। এবার তাদের আন্দোলনে এসেছে নতুন মাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান শিক্ষার্থীরাও ওইসব ভর্তিচ্ছুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র। যেখানে ছাত্রলীগ এবং বাম ছাত্রসংগঠনের জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোট দাঁড়িয়েছে এক কাতারে।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন- শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য ধীষণ প্রদীপ চাকমা, বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ সভাপতি গৌরচাঁদ ঠাকুর অপু, সাধারণ সম্পাদক আশরাফী নিতু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আইরিন সুলতানা, ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সায়মা আখতার নিশোসহ অন্যান্যরা।একই সুরে ভর্তিচ্ছুদের দাবি আদায়ে কথা বলেছেন ছাত্রলীগ এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোট নেতারা।

এই বছরের গেল মার্চ মাসেও ক্যাম্পাসে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল ছাত্রলীগ এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোট। ১২ মার্চ ডাকসু পুনর্নির্বাচনের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের মিছিলে হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাত মুমু, ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা জাহান ও মুশরিক ওয়াসিফ। হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের পক্ষ দুইটি ছিল- একাকার ও বাংলার মুখ। এসব পর আবারও এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন তারা।

বিষয়টাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী জাওয়াদুল জামান অরণ্য বলেন, একটি ন্যায্য দাবি আদায়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর এমন একতা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা চাই ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে এ রকম একতা বজায় থাকুক।

ছবি

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবির হাসান তিতাসের সঞ্চালনায় আয়োজিত মানববন্ধনে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘কাউকে দোষ দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা না দেওয়া উচিত। উপাচার্য মহোদয় সবার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ বিষয়ের সমাধান করবেন বলে আশা করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন রয়েছে, এসবের মাঝে জটিলতাও রয়েছে। এসব জটিলতা দূর করে কীভাবে উত্তীর্ণদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা করুন। কারো চোখের জল নয়, আমরা চাই সুষ্ঠু সমাধান। ছাত্রলীগ সবসময় এ ধরনের যৌক্তিক দাবির পাশে থাকব।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হয়েছে। কিন্তু সার্কুলারে অসঙ্গতির কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারছেন না। যেখানে অস্পষ্টতা থাকে, সেখানেই জটিলতা সৃষ্টি হয়। এই শিক্ষার্থীরা ক্লান্ত, তাদের অভিভাবকরা আসছে। আমরা তাদেরকে স্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারছি না। কতটা অসহায় আর নির্মমতার শিকার হলে এভাবে তারা সাহায্য চাইতে পারে। এ ছেলেমেয়েগুলোর যেহেতু পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু তাদের সুযোগ দিতে হবে। ভুল সবারই থাকে, অতিদ্রুত বিষয়টির সমাধান করুন।’

ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ধীষণ প্রদীপ চাকমা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হয়। যারা ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মেধার প্রমাণ দিয়েছে তাদেরকে অযোগ্য বলে উল্লেখ করছে। আইটি সেলের অস্পষ্টতার দায়ভার ছাত্ররা নেবে কেন। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয় সে জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’

শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আইরিন সুলতানা বলেন, ‘ভুল প্রশাসনের হয়েছে শিক্ষার্থীদেরও হয়েছে। ভুল শুধরে নিয়ে তাদেরকে ভর্তির সুযোগ দিন। তাদের স্বপ্নটাকে ভেঙে দিয়ে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেবেন না।’

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মো. মাঈনুদ্দিন বলেন, ‘তাদের সার্কুলার অনুযায়ী আমরা মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারব বলে আমরা জেনেই পরীক্ষা দিই। তারা আমাদের আবেদন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ ফলও প্রকাশ করেছে। আমরা কত কষ্ট করে একবছর নষ্ট করে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি। একজন শিক্ষার্থী নয় শুধু, এর মাধ্যমে পুরো পরিবারের স্বপ্ন নষ্ট করে দিচ্ছে। একটি বছর নষ্ট করেছি শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব বলে। এখন আমরা চাই আমাদের ভর্তি করানো হোক।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয়, ইমাম উদ্দিন ফয়সাল পারভেজ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সায়মা আক্তার নিশো, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ রূপক। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মুনতাছির ও সুমাইয়া মেহেরাজ।

মানববন্ধনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রায় চার শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড