• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সামাজিক সুরক্ষা ব্যয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ২১তম

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

২০ আগস্ট ২০১৯, ১০:১২
এডিবি
(ছবি: সংগৃহীত)

সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সামাজিক সুরক্ষা খাতে খরচ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এশিয়ার ২৫টি দেশের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ‘দ্য সোশ্যাল প্রোটেকশন ইন্ডিকেটর ফর এশিয়া: অ্যাসেসিং প্রোগ্রেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, খরচের দিক থেকে বাংলাদেশ এশিয়ার নিচের দিককার পাঁচটি দেশের একটি। বাংলাদেশের পেছনে শুধু চারটি দেশ আছে যেগুলো হচ্ছে- মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভুটান ও লাওস। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২১তম। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ অর্থ সামাজিক সুরক্ষায় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ পরিমাণ খরচ করে। তালিকার শীর্ষে থাকার জাপান এই খাতে জিডিপির ২১ শতাংশের বেশি ব্যয় করে।

এডিবির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আমাদের দেশে নারীদের চেয়ে পুরুষেরা বেশি সুরক্ষা পান। আবার সামাজিক সুরক্ষার জন্য গরিব মানুষের পেছনে যতটা খরচ হয়, ধনীদের পেছনে এর চারগুণ বেশি খরচ হয়।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সামাজিক সুরক্ষার পেছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয়কারী দেশ জাপানে গরিব লোক নেই বললেই চলে। এরপরও দেশটি সব নাগরিককে তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একটি সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা দেয় । দেশটি ২০১৫ সালে বাংলাদেশের চেয়ে ৩৬৪ গুণ বেশি অর্থ খরচ করেছে। বাংলাদেশের মাত্র ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষার কোনো না কোনো সুবিধা পান। এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে গরিবদের চেয়ে ধনীরাই সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা বেশি পান। তাঁদের পেছনে বেশি খরচ হয়। আমাদের মাথাপিছু জিডিপির মাত্র দশমিক ২ শতাংশ গরিব মানুষের পেছনে খরচ হয়। আর ধনীদের পেছনে খরচ হয় দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ গরীবদের তুলনায় ধনীদের সামাজিক নিরাপত্তায় ৪ গুণ বেশি খরচ হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম বলেন, অসমতা ও দারিদ্র্য দূর করতে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়াতেই হবে। এই খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে। এখনো জিডিপির ২ শতাংশের কম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এটি অন্তত ৩-৪ শতাংশে উন্নীত করা উচিত। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অনুযায়ী দারিদ্র্য নির্মূল করতে হলে এসব গরিব মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা জোরদারে নজর দিতেই হবে।

বর্তমানে দেশে এখন ৭৪ লাখ লোক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা পান। এই কর্মসূচির আওতায় সরকার বিধবা ভাতা, দরিদ্র নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদি দিয়ে থাকে। এছাড়া ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিডি), টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে টাকাসহ (কাবিটা) বিভিন্ন কর্মসূচিও আছে।

এ দিকে অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, দেশের এক চতুর্থাংশ পরিবারের ২ কোটি ২০ লাখ মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে ।

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০১৯-২০ হতে ২০২১-২২ মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে এ কথা জানান তিনি।

আগামী ৫ বছরে এই খাতের বরাদ্দ দ্বিগুণ করে ২০২৩-২৪ সালে চরম দারিদ্রের হার ৪ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ খাতে ৬৪ হাজার ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে দারিদ্রের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী ২০২০ সালে দারিদ্রের হার হবে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ।

সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে ভাতার হার বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকার ও ব্যক্তির মধ্যে জি-টু–পি পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি এই ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্রের হার ৩ শতাংশে এবং দারিদ্রের হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে এসডিজি অর্থায়ন কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে।

এসডিজি বাস্তবায়নে বার্ষিক ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫শ কোটি টাকার অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে। এই হিসেবে ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি বাস্তবায়নে মোট ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ১শ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলেও জানান আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড