অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার্স ও হাই নেট ওর্থ ইন্ডিভিজ্যুয়াল (এইএনআই) ইনভেস্টরদের কর মওকুফের দাবি জানিয়েছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিইএবি)। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি প্রভিডেন্ট ফান্ড ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রেও কর ছাড়ের দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার্সের ক্ষেত্রে তারা সরকারের কাছে আগামী ১০ বছরের জন্য শতভাগ কর মওকুফ চায়। এছাড়া হাই নেট ওর্থ ইন্ডিভিজ্যুয়াল ইনভেস্টরদের কর মওকুফ ও প্রভিডেন্ট ফান্ড ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রেও কর ছাড় চাওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভিসিপিইএবির চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের সাথে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সর্ম্পক উল্লেখজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের কাছ থেকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় পলিসি সহায়তা পায় এবং বড় বড় মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের কোম্পানির উত্থানে সরাসরি সহায়তা করে’।
তিনি বলেন, ‘সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং প্রায়শই ক্ষুদ্র ও নতুন কোম্পানির একমাত্র অর্থনৈতিক উৎস হিসেবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কাজ করে। এ খাতে যদি অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার্স ও হাই নেট ওর্থ ইন্ডিভিজ্যুয়াল ইনভেস্টরদের কর মওকুফ এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের পলিসি সহায়তা পাওয়া যায়, তাহলে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে পারে’।
এসময় তিনি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ এবং রিটার্ন বেশি উল্লেখ করে বলেন, এ খাত থেকে বিনিয়োগের পাশাপাশি ম্যানেজম্যান্টকে সহায়তা করা হয়, যা কোনো ব্যাংক থেকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে করা হয় না। এছাড়া ব্যাংক খাতে ম্যানেজম্যান্টকে সহায়তা করার মত প্রফেশনাল লোকজন নেই। ফলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে যেখানে বিনিয়োগ করা হয়, সেখানে ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ করা হয় না।
অন্যদিকে ভিসিপিইএবির মহাসচিব শওকত হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডগুলো নতুন। এসব কোম্পানির বিনিয়োগ থেকে রিটার্ন আসতে গড়ে ১০ বছর লেগে যায়। দেশের অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্টগুলো এখনও বিনিয়োগ থেকে মুনাফায় যেতে পারেনি। অথচ ফান্ডগুলোকে এফডিআর থেকে অর্জিত সুদের ওপরে ৩৫ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে। এ খাতকে এগিয়ে নিতে তাই কর মওকুফের সুবিধা দেওয়া উচিত। পাশাপাশি ২ শতাংশ স্টাম্প ডিউটি ছাড় দিতে হবে’।
তিনি আরও বলেন, সঞ্চয়পত্রের থেকে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট থেকে সংগৃহীত ফান্ডের জন্য রিটার্ন বেশি দিতে হয়। না হলে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্টে কেউ ফান্ড দেবে না। তাহলে দেখা যাবে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১২ শতাংশ হলে, সংগৃহীত ফান্ডের জন্য ১৪-১৫ শতাংশ রিটার্ন দিতে হবে। আর শুরুতেই ২ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হলে, সেটা ১৬-১৭ শতাংশে চলে যায়। ফলে খাতটিকে একটি অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য কর সুবিধা দেওয়া দরকার।
এছাড়া ভিসিপিইএবির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্টের ফান্ডে স্ট্যাম্প নেই। তাই বাংলাদেশেও স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার্সের ক্ষেত্রে ১০ বছর কর মওকুফ করার দাবি জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং ভিসিপিইএবির পরিচালক ওয়ালি-উল মারুফ মতিন বলেন, এখন যদি অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার্সকে কর মওকুফের সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে ১০ বছরে সরকার এখনকার থেকে ৪০-৫০ গুণ বেশি কর পাবে। এজন্য এই সেক্টরকে উন্নতি ও বড় কর আদায়ের জন্য কর মওকুফের সুবিধা দেওয়া উচিত।
আগামী ২০ বছর পরে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ছাড়া বিনিয়োগের কথা চিন্তাই করা যাবে না। ওই সময় অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে বড় বড় বিনিয়োগ হবে বলেও জানান তিনি।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড