• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঈদের শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে অনলাইন কেনাকাটা

  তারিন ফাহিমা

০১ জুন ২০১৯, ১৪:২৫
অনলাইন শপিং
ছবি : সংগৃহীত

ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা, বিক্রেতাসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় নগরীর মার্কেট, শপিং মল, ফুটপাতসহ সব জায়গায় ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতা সাধারণ। সব মিলিয়ে এক কথায় ঈদের কেনাকাটা এখন জমজমাট। তবে শুধু ছোট-বড় বিপণিবিতানই নয়, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কেনাকাটা জমে উঠেছে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এফ-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোতেও।

সাবরিনা পারভীন, একজন কর্মজীবী মহিলা। জীবিকার টানে প্রতিদিন সাভার থেকে বাংলামটর এসে অফিস করেন। রমজানের এই সময় তুলনামূলকভাবে রাস্তায় জ্যামও বেশি থাকে। আর ইফতারি শেষে বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। এজন্য সে এবার ঈদের কেনাকাটায় অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্সকেই বেছে নিয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যস্ত নগরীতে কাজের ফাঁকে শপিংয়ের জন্য আলাদা সময় বের করা আসলেই একটু কঠিন। তাই ঘরে বসেই আমার ও পরিবারের সবার জন্য পছন্দের জামাকাপড়সহ জুতা, স্যান্ডেল কিনতে পারছি। এছাড়া আগের তুলনায় এখন অনলাইন শপগুলো মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে।

শুধু সাবরিনা পারভীনই নয়, তার মতো অনেক কর্মজীবী মানুষসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষই এখন অনলাইন কেনাকাটার দিকে ঝুঁকছেন। ফলে এই খাতে ব্যবসাও অনেক প্রসারিত হচ্ছে এবং কেনাবেচার পরিমাণও আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে।

অনলাইনে নিয়মিত কেনাকাটা করেন এমন বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সড়কে যানজট এবং শপিং সেন্টারগুলোর ভিড়ের যন্ত্রণায় অনলাইনকেই কেনাকাটার প্রথম পছন্দ ধরে রেখেছেন। এছাড়া অনলাইন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অথেনটিক শপ, পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার প্রতি ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিশ্রুতি এবং উন্নত গ্রাহক সেবার কারণে গ্রাহকেরাও কেনাকাটার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। পাশাপাশি এই অনলাইন শপগুলো গ্রাহকদের নানা রকম ছাড় দিচ্ছেন। আর গ্রাহকেরাও সহজেই এই অফার লুফে নিচ্ছেন। নারী ও পুরুষদের পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স ও গ্যাজেটস, ফ্যাশন আইটেমসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যই অনলাইনে কিনছেন গ্রাহকেরা।

দেশীয় বাজারের ই-কমার্স খাত সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা এবারের ঈদে অনলাইনে কেনাকাটা সব থেকে বেশি হওয়ার আশা করছেন। শুধু তাই নয়, রাজধানী ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরগুলোর বাইরের এলাকার মানুষও ঈদ কেনাকাটা অনলাইনে সেরে নিচ্ছেন। দারাজ, পিকাবু, অথবা ডট কম, আজকের ডিল, বাগডুম, ইভ্যালির মতো অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলোর প্রতি ক্রেতারা আস্থা রাখছেন। এছাড়াও এফ-কমার্সের বহুল জনপ্রিয় পেজ ও গ্রুপ পরিচালনাকারীদেরও গ্রাহকদের অর্ডারে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাবের কাছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় ঠিক কতো টাকার লেনদেন হয় তার সঠিক হিসাব কাছে না থাকলেও সংগঠনটির ধারণা, যে কোনো বারের তুলনায় এবার অন্তত ৫০ শতাংশের বেশি আর্থিক লেনদেন হবে।

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, এখন আমাদের দেশে ই-কমার্সে বার্ষিক এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়, যার বড় অংশই দুই ঈদের সময়ে। আর ঈদুল ফিতরের সময় এই কেনাকাটার চাপ সব থেকে বেশি থাকে। আশা করছি, এবারের ঈদে লেনদেন অন্যান্য সময়ের থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। আমাদের সংগঠনে ৯৫০টিরও বেশি সদস্য প্রতিষ্ঠান আছে যারা এখন প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার অর্ডার গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করছেন। অন্যান্য সময়ে এর পরিমাণ ২০ হাজারের কিছু বেশি থাকে। ই-কমার্সগুলোও গ্রাহকদের সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও এখানে গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও বেড়েছে। যার কারণে গ্রাহকেরা ঘরে বসে এক জায়গাতেই নানাবিধ পণ্যের সমাহার খুব সহজে পাচ্ছেন। ফলে ই-কমার্সের পুরো ইকো-সিস্টেমেই একটা বড় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এসব কিছুরই ফলাফল ই-কমার্সে গ্রাহকদের এ আস্থা।

দেশের অন্যতম ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সায়ন্তনী ত্বিষার সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ই-কমার্স শপিং ট্রেন্ডের ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি উভয় ভোক্তাদের এবং ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা সবসময়ই দেখি ঈদের বাজার মানেই ভিড়, এর মধ্যে অনলাইন শপিং খুব সহজেই ক্রেতাদের স্বস্তির ব্যবস্থা করছে। এছাড়া অনলাইন শপিং ডিজিটাল ব্যবস্থায় সুবিধা গ্রহণে মানুষকে আগ্রহী করে তুলছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনেও কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। এবারের ঈদে আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, ঈদ ক্যাম্পেইন শেষ হওয়ার আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সে হিসেবে বলা যায়, ঈদ কেনাকাটায় ই-কমার্স সাইট এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড