দেশের ৫০ শতাংশ ব্যাংক সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে

দেশের ৫০ শতাংশ ব্যাংক সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজম্যান্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইবার নিরাপত্তায় দেশের ৫০ শতাংশ ব্যাংক নেক্সট জেনারেশন ফায়ারওয়্যাল (এনজিএফডব্লিউ) সফটওয়্যার স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। ৩৫ শতাংশ ব্যাংকে আংশিক এবং ১৫ শতাংশ ব্যাংকে এটি স্থাপন অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। ফলে এই ৫০ শতাংশ ব্যাংক যে কোনো সময় এসব ব্যাংক সাইবার হামলার সম্মুখীন হতে পারে।

রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে সোমবার (১ এপ্রিল) ‘আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রতিবেদনটি উপস্থাপিত হয়েছে। বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রহিম স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বিআইবিএমের প্রতিবেদনে ব্যাংকিং খাতের আইটি বিভাগে কর্মরত জনবলের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে সার্বিক ব্যাংকিং খাতে মাত্র ৩ হাজার ২১৩ জন আইটি বিভাগে কর্মরত ছিল । অর্থাৎ গড়ে আইটি বিভাগে ৫৭ জন কর্মরত। এর মধ্যে সর্বনিম্ন জনবল ৬ জন ও সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন। প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৪১ -১১৬ জন নন-আইটি কর্মকর্তার জন্য মাত্র ১ জন, বিশেষায়িত ব্যাংকে সর্বোচ্চ ১৫১-২৬৯ কর্মকর্তার জন্য ১ জন, বেসরকারি ব্যাংকে ১৪-৯১ জনের জন্য ১ জন, বিদেশী ব্যাংকে ১৪ -৪৫ জনের জন্য ১ জন আইটি কর্মকর্তা রয়েছেন। সেখানে আরও উঠে এসেছে, ২০১৮ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৮ শাখার জন্য ১ জন, বিশেষায়িত ব্যাংকে ২৯ শাখার জন্য ১ জন, বেসরকারি ব্যাংকে ৪.৫ শাখার জন্য ১ জন এবং বিদেশী ব্যাংকে ২.২ শাখার জন্য ১ জন আইটি কর্মকর্তাকে কাজ করতে হয়েছে।

এছাড়া প্রতিবেদনে আইটি খাতে ব্যাংকের একটি ব্যয়ের চিত্র দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, ব্যাংকগুলো আইটি খাতের উন্নয়নে ১৯৬৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ব্যয় হয় ২ হাজার ২১ কোটি টাকা। আইটি খাতে সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ হার্ডওয়্যারের পেছনে ব্যয় হয়। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ নেটওয়ার্কের পেছনে ব্যয় হয়।

পাশাপাশি প্রতিবেদনে ১ জন আইটি কর্মকর্তাকে গড়ে কতটি শাখায় সেবা দিতে হয়, সেই চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের ব্যাংকে আইটি বিষয়ে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। তাই আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে হবে, যেন বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটা রোধ করতে পারি। এজন্য টেকনোলজি উন্নতি করতে হবে। শুধু ভালো সফটওয়্যার কিনলেই হবে না। এগুলো যথাযথ পরিচালনার জন্য দক্ষ কর্মীও তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের আইটি প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে।

ওডি/টিএফ