অধিকার ডেস্ক ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৬:১১
প্রতি বছর কুরবানি ঈদে আমাদের দেশে সাধারণত ৪২ থেকে ৪৪ লাখ গরু জবাই করা হয়। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের কাছ থেকে ৩০ লাখের জোগান আসে। আর বাকি গরু নেপাল, ভারত অথবা মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়।
তাই সরকার এবার মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে কুরবানিতে যাতে অন্য দেশ থেকে গরু আমদানি করতে না হয়, সেজন্য সারা দেশে গরু মোটাতাজাকরণের ওপর ১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৫ জন খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
‘আধুনিক প্রযুক্তিতে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রকল্পের আওতায় সরকার ৫০ শতাংশ নারীকে প্রশিক্ষণ দেবে। ফলে দেশের প্রান্তিক খামারিদের গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন করা হবে। একইসাথে নির্বাচিত খামারিদের একটি করে হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ডে প্রশিক্ষণসহ সব উপকরণ বিতরণের তথ্য এবং গরুর স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য উল্লেখ থাকবে। প্রকল্প পরিচালক অফিস এবং স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে এই কার্ড বিতরণ করা হবে।
জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে কমপক্ষে যাদের দুটি এঁড়ে, ষাড় বাছুর আছে বা পালন করার সামর্থ্য আছে, তাদের মধ্য থেকে প্রতি বছর তিন ব্যাচে ৭৫ জন আগ্রহী প্রান্তিক খামারিকে সুফলভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হবে। আর খামারি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকার ৫০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। প্রকল্পের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মণ্ডল বলেন, মাংস উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চাই। এজন্য সরকার নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে লক্ষাধিক খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। এই হেলথ কার্ড নিতে কোনো টাকা-পয়সা লাগবে না। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৪৯১টি উপজেলায় নির্বাচিত খামারিদের মধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হবে।খামারিরা গবাদি পশুর বাসস্থান, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খড় প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিৎসা, খড় সংরক্ষণ পদ্ধতি সাইলেজ প্রস্তুতকরণ, , উন্নত ঘাস চাষ ও গরুর শারীরিক ওজন নির্ণয় পদ্ধতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন। এছাড়া খামারিদের ইউরিয়া ও মোলাসেস মিশ্রিত খড় পদ্ধতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে নিরাপদে গরু মোটাতাজাকরণ করা যায়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, বাংলাদেশ গরু পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এটা ধরে রাখতে সারাদেশে লক্ষাধিক খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের সব জেলায় সমানতালে গরু পালন করা হয় না। যেসব এলাকায় বেশি হারে গরু পালন করা হয় সেই সব এলাকা বেছে নেওয়া হবে। খুব তাড়াতাড়ি সারাদেশে এই কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ২ কোটি ৮১ লাখ ৮৯ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৭৬টি ষাঁড় এবং ১ কোটি ৭২ লাখ ১৩ হাজার গাভী রয়েছে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড