• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দুলছে আম, গুটি বেঁধেছে চাষির স্বপ্ন

  এম মোবারক হোসাইন, পঞ্চগড়

১১ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১১
আম চাষিরা
গুটি বাঁধা সেই সবুজ দানাতেই স্বপ্ন দেখছেন আম চাষিরা (ছবি- দৈনিক অধিকার)

চলছে চৈত্রের শেষ সময়। পার্বণের এ মৌসুমে শুরুটা ভালো হয়নি। মৌসুমের শুরুতে বৈরি আবহাওয়া পঞ্চগড়ের আম বাগানগুলোর চাষিদের কপালে পড়েছিল চিন্তার ভাজ। তবে মৌসুম শেষে বৃষ্টি, ঝড় আর শিলাবৃষ্টির ধকল কাটিয়ে দানা বেঁধেছে আমের গুটি।

সদ্য গুটি বাঁধা সেই সবুজ দানাতেই স্বপ্ন দেখছেন পঞ্চগড়ের আম চাষিরা। দিনের সব ব্যস্ততা তাই এখন আম গাছ ঘিরে। তবে মৌসুমের এই বিশেষ সময়ে যত্ন বেড়ে যায়। আমগাছে কীটনাশক স্প্রে, গোড়ায় পানি দেওয়াসহ দেখভালের কাজ এখন চলছে পুরোদমে। গেল কয়েক বছরের তুলনায় এবার পঞ্চগড়ের প্রতিটি গাছেই পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে। এগুলোর বেশিরভাগেই গুটি বেঁধেছে আম।

স্থানীয় আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা কালবৈশাখীর মৌসুমে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে গত কয়েক বছরের তুলনায় পঞ্চগড়ে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার পুরাতন বাজার গ্রামের আম চাষি হারেজ আলম দৈনিক অধিকারকে বলেন, এবার ফাল্গুন মাসেও হালকা কুয়াশা ও বৃষ্টি হয়েছিল। তাই মুকুল আসার শুরুতেই অসময়ের কুয়াশায় মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। এরপর শুরু হলো তাপদাহ। দিনে রৌদ্রের প্রখরতা আর রাতের শীতল আবহাওয়া। এতে কিছু মুকুল নষ্ট হয়েছে অঙ্কুরেই। এরপর একদফা গেছে শিলাবৃষ্টির ধকল। সামনে তাপদাহ এবং কালবৈশাখীর শঙ্কাও রয়েছে। তবে এত দুর্যোগের পরও প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত মুকুল রয়েছে। সেসব গাছের অধিকাংশেই এখন আমের মুকুল গুটিতে পরিণত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত গুটি ঝরার মতো কোনো ক্ষতির মুখে পড়েনি আমগাছগুলো। এমন রূপে শুরু হওয়া খরা আবহাওয়া পরে রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেই বিপদ। এতে ফলনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। শেষ পর্যন্ত তা না হলে আশানুরূপ ফলন হবে বলেও প্রত্যাশার কথা বলেন আম বাগান মালিক নুর ইসলাম।

হপার পোকার আক্রমণ দূর করতে সাধারণত দুইবার আমগাছে ওষুধ স্প্রে করতে হয় বলে দৈনিক অধিকারকে বলেন কাজী মকসেদ নামে অপর আমচাষি। তিনি বলেন, গাছে পুরোদমে মুকুল আসার পর একবার আর গুটি ধরার পর একবার স্প্রে করতে হয়।

এছাড়া গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় মৌসুম জুড়েই। ডিসেম্বরের শেষে মুকুল আসার পর জানুয়ারিতে ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে। পুরোদমে গুটি আসার পর মার্চের শেষে, এপ্রিলের শুরুতে আরও একবার স্প্রে করতে হচ্ছে। তবে এবারের ঠান্ডা-গরম আবহাওয়া নিয়ে তারা একটু দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলেন আব্দুস সামাদ।

আম চাষে সফল কৃষক উপজেলার পাগলী ডাঙ্গি গ্রামের মো. নেজারউদ্দিন দৈনিক অধিকারকে বলেন, এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেই হয়। তাহলে আমের উৎপাদন ভালো হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, চাষিরা এখন আমগাছের নিয়মিত পরিচর্যা করেন এবং যত্ন নেন। তাই প্রতি বছরই ভালো ফলন হয়। হুট করে গরম চলে আসলেও আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলেই রয়েছে। রাতের হালকা হালকা শীত আমের উপকারী। আর এই মাসে প্রায় বৃষ্টি হচ্ছে। এটি আরও ভালো। কারণ এতে আমের গাছে আসা গুটি বেশি স্থায়ী হবে। এখন কালবৈশাখী কম হলে আমের উৎপাদন বেশি হবে বলেও আশা করা যাচ্ছে। তাই লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে।

ওডি/এসএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড