• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রিকশাচালক-হকার-ফেরিওয়ালাও পাবেন জামানতবিহীন ঋণ

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩২
রিকশাচালক-হকার-ফেরিওয়ালাও পাবেন জামানতবিহীন ঋণ
রিকশাচালক (ফাইল ছবি)

অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ভূমিহীন কৃষক, কুমার, কামার, হকার, জেলে, দোকানি ও রিকশাচালকরা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। আর এই ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ সাত শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক এ লক্ষ্যে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার হিসাবধারীদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে।

রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত নতুন স্কিম পুনর্গঠনের মাধ্যমে সবগুলো তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের লোকজনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুদ্ধারে ঋণসীমা ও তহবিলের পরিমাণ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যে তহবিলের নাম ‘১০, ৫০ ও ১০০ টাকার হিসাবধারী প্রান্তিক ও ভূমিহীন কৃষক, স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারী, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য গঠিত পুনঃ অর্থায়ন স্কিম।’

গঠিত ৫০০ কোটি টাকার এ স্কিমের মেয়াদ হবে মোট পাঁচ বছর। যা নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই আবর্তনশীল। কিন্তু প্রয়োজনে সেই মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।

ঋণের পরিধি

আর্থিক অন্তর্ভুক্ত কার্যক্রমের আওতায় স্কিমটির অধীনে ঋণ সুবিধা গ্রহণকারী সব গ্রাহকই হবে বিদ্যমান ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার হিসাবধারী। গুরুত্বপূর্ণ সেই স্কিমের আওতায় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির জন্য নতুন গ্রাহকদের ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) জমাদান পূর্বক ব্যাংক হিসাব খোলা লাগবে।

কারা ঋণ পাবেন?

# পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী (যেমন : স্বর্ণকার, চর্মকার, কামার, কুমার, নাপিত, জেলে, হকার/ফেরিওয়ালা, দর্জি, রিকশাচালক/ভ্যান চালক, ইলেকট্রিক/ইলেকট্রনিক যন্ত্র মেরামতকারী, ইলেক্ট্রিশিয়ান, কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি, প্লাম্বার, গ্রিল মিস্ত্রি, আচার/পিঠা প্রস্তুতকারী, পশু চিকিৎসক, ক্ষুদ্র তাঁতি ইত্যাদি) এবং যে কোনো ধরনের আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি (মুদি ও মনোহরি পণ্যের দোকানি, ফ্লেক্সিলোড সেবা প্রদানকারী, চা-পান বিক্রেতা, ভ্রাম্যমাণ কাপড়ের দোকানি, সবজি উৎপাদনকারী, হাঁস-মুরগি পালনকারী ইত্যাদি এ ঋণ সুবিধার আওতাভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন।

# যে কোনো দুর্যোগে (প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট) ক্ষতিগ্রস্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, প্রান্তিক বা ভূমিহীন কৃষক, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী এবং চর ও হাওর এলাকায় বসবাসকারী স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ ঋণ সুবিধা পাবেন।

# বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মহিলা ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাগণ যে কোনো ধরনের আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা পাবে।

# স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সুবিধা বঞ্চিত ও অসচ্ছল স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারীদের (শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীসহ) কারিগরি/বৃত্তিমূলক/তথ্যপ্রযুক্তিসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাংক উক্ত স্কিমের আওতায় অভিভাবকের পরিশোধ গ্যারান্টির ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা পাবে।

ঋণ প্রাপ্তির অযোগ্যতা

খেলাপি ঋণগ্রহীতা এ স্কিমের আওতায় ঋণ সুবিধা প্রাপ্য বলে বিবেচিত হবেন না। বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদ ভর্তুকির আওতায় অন্য কোনো স্কিমের অধীন ঋণগ্রহীতার প্রাপ্ত ঋণ অসমন্বিত অবস্থায় থাকলে ওই ঋণগ্রহীতা ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

গ্রাহক পর্যায়ে ঋণসীমা

তফসিলি ব্যাংকগুলো এ স্কিমের আওতায় গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা যাচাই সাপেক্ষে একক গ্রাহককে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দিতে পারবে। গ্রুপ ঋণের ক্ষেত্রে ২-৫ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপকে সদস্য প্রতি সর্বোচ্চ চার লাখ টাকা করে গ্রুপপ্রতি সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা ঋণ দিতে পারবে। একই সঙ্গে গ্রুপ ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্রুপের সদস্যরা ব্যক্তিগত ও যৌথভাবে ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

পুনঃ অর্থায়নের সুদের হার

অর্থায়নকারী ব্যাংকের অনুকূলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়নের বার্ষিক সুদ বা মুনাফার হার এক শতাংশ হবে।

গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার

ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহক পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণ/বিনিয়োগের বিপরীতে সুদ/মুনাফার হার দাঁড়াবে বার্ষিক সর্বোচ্চ সাত শতাংশ। গ্রাহকের ঋণ/বিনিয়োগের ক্রমহ্রাসমান স্থিতির ওপর সুদ/মুনাফা আরোপ করা হবে।

ঋণের মেয়াদ, গ্রেস পিরিয়ড ও পরিশোধ সূচি

ব্যাংক ও গ্রাহক পর্যায়ে উভয় ক্ষেত্রে গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ছয়মাস। গ্রেস পিরিয়ড বাদে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন বছর। বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রেস পিরিয়ড বাদে ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ব্যাংকগুলো থেকে সুদ/মুনাফা/সার্ভিস চার্জসহ আসল আদায় করবে। ব্যাংকগুলো গ্রেস পিরিয়ড বাদে মাসিক/ত্রৈমাসিক/ষাণ্মাসিক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) কিস্তিতে গ্রাহকের কাছ থেকে সুদ/মুনাফাসহ আসল আদায় করবে।

জামানত

গুরুত্বপূর্ণ সেই স্কিমের আওতায় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো নিরাপত্তা জামানত গ্রহণ করা হবে না। যদিও প্রত্যেক ঋণগ্রহীতাকে ঋণের বিপরীতে ঋণগ্রহীতাসহ অনধিক দুইজনের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি দিতে হবে।

আরও পড়ুন : ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ

তিন লাখ টাকা ও তারও অধিক পরিমাণ ঋণ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় সম্পূর্ণ ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে গ্যারান্টি ফি পরিশোধ করবে।

সিআইবি রিপোর্ট

খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ঋণ প্রদান না করার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে সিআইবি রিপোর্ট নিতে হবে। যদিও এ স্কিমের আওতায় তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ/ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্ট নেওয়ার জন্য কোনো চার্জ বা ফি প্রযোজ্য হবে না।

ঋণ বিতরণ ব্যবস্থা

সরকারি এই স্কিমের আওতায় ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তার নিজস্ব শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) ব্যবস্থা ব্যবহার করতে পারবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংকের এজেন্ট/এমএফএস ঋণ বিতরণ এবং আদায়ের ক্ষেত্রে নিজ নিজ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত সার্ভিস চার্জ প্রাপ্য হবেন।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড