করোনার ছোবলে পাকিস্তানে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু-আক্রান্তের রেকর্ড

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে পাকিস্তানে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আরও ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। পাকিস্তানে করোনার তাণ্ডব শুরুর পর একদিনে যা সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ১৯২ জন।

দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার (২০ মার্চ) এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানে গত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে আরও ৭০৫ জন আক্রান্ত হওয়ার পর দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা এখন ৯ হাজার ২১৪ জন।

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় পাকিস্তান দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছিল। কিন্তু নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণে সম্প্রতি লকডাউন সংক্রান্ত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে শুরু করেছে দেশটির সরকার। আর এমন পদক্ষেপ নেওয়ার পরপরই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেল।

তবে পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৩ জন কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন। দেশটিতে প্রথমদিকে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশ কম। কিন্তু পাকিস্তানের সরকার প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা ঘোষণা দিয়ে তা কার্যকর করা শুরু করলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।

পাকিস্তান সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১১ হাজার ৮০৬ জনের করোনা পরীক্ষা করেছে। সেই হিসাব করলে দেশটিতে প্রতি ২ হাজার মানুষের মধ্যে একজনের করোনা পরীক্ষা করেছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় যা অনেকটা বেশি।

প্রাথমিকভাবে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর দেখা যায় পাকিস্তানে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সম্প্রতি ইরান কিংবা অন্য দেশ ভ্রমণের ইতিহাস ছিল। কিন্তু তারপর কিছুদিন গেলে দেশটিতে স্থানীয়ভাবে করোনার সংক্রমণ জোরালো হতে শুরু করে। দেশটির ৬৫ শতাংশ রোগীই এখন স্থানীয়ভাবে করোনায় সংক্রমিত।

এ দিকে, গত রবিবার (১৯ এপ্রিল) পাকিস্তানের চিকিৎসকদের সংগঠন গ্রান্ড ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের চিকিৎসকরা বিক্ষোভ করেন। তারা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, করোনা শনাক্ত ও চিকিৎসায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে না।

আরও পড়ুন : করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ইমরান খান!

অন্যদিকে রমজান মাসে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদগুলো পুনরায় খুলে দেওয়ার জন্য ইমরান খানের সরকার সমালোচনার মুখেও পড়েছেন। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত করোনার বিস্তারের জন্য ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে দাবি করেছেন অনেকে। তবে সরকার নামাজ আদায়ের অনুমতি দিলেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ২০টি নির্দেশনা দিয়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা