নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ১৪০ কোটি টাকার সার লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বিএডিসির সদস্য পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা) ড. আব্দুস সামাদ এর বিরুদ্ধে। ১৪০ কোটি টাকার সার লুটপাটের অভিযোগ তুলেছে ব্রহ্মপুত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডেটিং কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও নানা ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির নামে অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ করেছে ওই প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি বোরো মৌসুমে দেশের কৃষকদের সব ধরনের সারের সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে চায় সরকার। ঠিক তখন খবর পাওয়া যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ৫০০০ মেট্রিক টন সার (যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা) নদীতে গায়েব হয়ে গেছে। দাবি করা হচ্ছে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকায় সারবোঝাই লাইটার জাহাজ ডুবে গেছে। সার বোঝাই জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় চালকের গাফিলতি এবং বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনার কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি। বিএডিসির সার বোঝাই লাইটার জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় সরকারে ৫০০ মেটিক টন যার যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা মালামাল মের্সাস বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটিডের নিয়ে আসার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনা বিএডিসির সদস্য পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা) ড. আব্দুস সামাদ এবং সার ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রকল্প পরিচালক মজিবর রহমান জড়িত রয়েছে উল্লেখ করে এ ঘটনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ব্রহ্মপুত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডেটিং কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কৃষিবিদ এম এ মুজিদ যা গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।
লিখিত অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে বিএডিসির সদস্য পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা) ড. আব্দুস সামাদ ১৪০ কোটি টাকার সার লুটপাট করেছেন। এছাড়া বিএডিসির গত ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর আমদানিকৃত ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন সার বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যার মূল্য ১৪০ কোটি টাকা। ব্রহ্মপুত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডেটিং কোম্পানির দাবি, সেই সার এখন বিএডিসির কোনো সরকারি গুদামে নেই।
এছাড়া ওই অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় যে, বিএডিসির সার পরিবহন খাতে গত বছর অক্টোবর মাসে ৮৩.৯১ কোটি টাকার ছাড় প্রদান করা হয়। কিন্তু ড. সামাদ কমিশন না পাওয়ার কারণে সেই টাকা কয়েক মাস আটকে রাখেন। পরে ঠিকাদাররা ৩% কমিশন ছাড় দেওয়ার পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিল প্রদান করেন। ২৫ জন পরিবহন ঠিকাদারের মধ্যে মের্সাস নেয়াপাড়া, মের্সাস তাইবা সাইফুল্লাহ একই মালিক ২৭.৭৬ কোটি টাকা বিল প্রদান করা হয় এবং মের্সাস বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও মের্সাস দেশ টের্ডিক কপোরেশনকে ২৮ দশমিক ৫০ কোটি টাকার বিল প্রদান করা হয।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর ব্যবস্থাপক মো. ওবায়েদ হোসেনকে এ বিষয় ফোন করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে অবগত নয় বলে দৈনিক অধিকারকে জানান।
এ বিষয়ে বিএডিসির সদস্য পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা) ড. আব্দুস সামাদ দৈনিক অধিকারকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমে আলাপ করতে ইচ্ছুক নন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ৫০০ মেট্রিক টন সার (যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা) মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকায় সারবোঝাই লাইটার জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনার রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখার দরকার। সূত্রটি জানায়, অনেক সময় সার না এনে সরকারি টাকা লুটপাট করা হয়। আবার খারাপ সার এনে নদীতে বছর পর বছর জাহাজ রাখা হয়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড