• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৪০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সরকারের সময়সূচি মানে না প্রকৃতি, কী হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর?

  ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

২৫ অক্টোবর ২০১৯, ২২:২৯

নদীতে শুরু হয়েছে জোয়ার, বাড়ছে জোয়ারের পানি। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্কুলে যাবার জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততাও। জোয়ারের সঙ্গে পাল্লায় হেরে গেলে সেদিন আর যাওয়া হবে না স্কুলে। সারা দেশে যেখানে বাড়ির কাছে স্কুলে যায় শিক্ষার্থীরা, সেখানে জোয়ার ভাটায় চরম ঝুঁকি নিয়ে ডিঙ্গি নৌকা নিজেরা চালিয়ে প্রতিদিন শিশুদের স্কুলে যাওয়া আসার এ ঘটনা শুধু বিস্ময়করই নয় অবিশ্বাস্যও বটে। বিস্ময়কর এ শিক্ষাজীবন পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ি দোবড়া ইউনিয়নের ১৬টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।

পিরোজপুরের নাজিরপুর, বরিশালের বানাড়িপাড়া, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এ তিন উপজেলার মোহনায় বিল বেষ্টিত নাজিরপুরের দেউলবাড়ি দোবড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের প্রাইমারি ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ১৬টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নির্ভরশীল নদীর জোয়ার ভাটার সঙ্গে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন সকালে জোয়ারের সময় নিজেদের নৌকা চালিয়ে যেতে হয় স্কুলে, আর ফিরতে হয় ভাটার সময়। এদের স্কুলের সময়সূচী নির্ধারিত অনেকটাই প্রকৃতির নিয়মে জোয়ার ভাটায় সময় মেপে। সরকার নির্ধারিত সময়সূচী যেন প্রকৃতির কাছে জিম্মি।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, এ ইউনিয়নে মোট ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে এসব বিদ্যালয়ে যোগাযোগের জন্য নেই কোনো সড়ক পথ। আর বছরের অধিকাংশ সময় এখানে পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে স্কুল গুলোতে আসা যাওয়ার জন্য নৌকা ছাড়া উপায় নেই। তাই স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষক সবাইকে যেতে হয় নৌকায়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মহসিন আকন জানান, প্রতিদিন তাদের কোন না কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যাবার সময় জোয়ারের পানিতে কোনদিন তাদের ভিজে যায় বইখাতা, কোনদিন নিজেরা। স্কুলে বসে থাকতে হয় উৎকণ্ঠায়, কখন ভাটা হয়। ঠিক মতো বাড়ি যেতে পারবে কিনা, বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত এ চিন্তা থাকে তাদের ও বাবা-মায়ের। তারাও স্কুলে আসা যাওয়া করতে একই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। মাঝে মাঝে সময় মতো স্কুলে আসাতেও পারেন না তারা।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, গাওখালি থেকে মনোহরপুর পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ হলে এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। পাশাপাশি জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হবে এলাকার জনগণের এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভৌগলিক কারণে ওটি বিল এলাকা। সেখানে মোট ছয় কিলোমিটারে উঁচু করে বাধ দিয়ে পাকা রাস্তা করার জন্য প্রস্তাব ঢাকায় পাঠান হয়েছে। পাশাপাশি মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড