বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহার বাফার গুদামের সার কেলেঙ্কারির ঘটনায় মো. নবীর উদ্দিন খান (উপপ্রধান প্রকৌশলী, যান্ত্রিক) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। সার কেলেঙ্কারির সময় নবীর উদ্দিন বগুড়ার সান্তাহার বাফার গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) ছিলেন। সার লোপাটের ঘটনায় আরেক মামলারও আসামি তিনি।
বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন সান্তাহার বাফার গুদাম। দেশে কৃষকদের জন্য সার উৎপাদনের পাশাপাশি ঘাটতি পূরণে সার আমদানি করে থাকে বিসিআইসি। দেশের ২৪টি বাফার গুদামে এসব সার সংরক্ষণ করা হয়। আমদানি করা সার গুদাম পর্যন্ত পরিবহন করা হয় বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। কিন্তু সার পরিবহনের সময় নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে দুদক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বাফার গুদামের ১৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকারও বেশি মূল্যের প্রায় ৫২ হাজার ৩৪২ মেট্রিক টন সরকারি সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে মামলার তদন্তে নেমে দুদক নবীর উদ্দিন ও তার স্ত্রীর নামে অঢেল সম্পদের খোঁজ পান।
দুদক জানায়, ২০১৮ সালের ওই মামলা অনুসন্ধানকালে নবীর উদ্দিন ও মোহছীনা নামে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অস্বাভাবিক সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। এরপর চলতি বছরের ২৫ জুন নবীর দম্পতির সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি হয়। ওই দম্পত্তি আগের মামলার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। নবীর উদ্দিন একজন করদাতা।
করের তথ্য মতে, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের হিসাবে নবীর উদ্দিন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পদ দেখান। এভাবে তিনি মোট সম্পদের পরিমাণ দেখান ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ২৮৬ টাকা।
দুদকের অনুসন্ধান বলছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নবীর উদ্দিনের নামে ৭১টি দলিল রয়েছে। জমির পরিমাণ ২৬ একরেরও বেশি। এছাড়া বাড়ি ক্রয়, গবাদি পশুর খামার নির্মাণ বিনিয়োগসহ তার ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৭৭ হাজার ২৩০ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। নবীর উদ্দিনের নামে বিভিন্ন ব্যাংক, একটি মোটরযানসহ ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩২ টাকার অস্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলেছে। সব মিলে নবীর উদ্দিন দম্পতির ৫ কোটি ৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৬২ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তাদের বৈধ আয়ের উৎস রয়েছে ১৩ লাখ ৩১ হাজার ১২৩ টাকার। অর্থাৎ এই দম্পতি জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১ হাজার ৮৩৯ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
বগুড়া দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, এই দম্পতির বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়ি রয়েছে। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তার কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। অনুসন্ধানে নবীর দম্পতির জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৭৭ হাজার ২৩০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অপরাধের কারণে দুদক কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড