• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঠাকুরগাঁওয়ে ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

১২ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৫১
আশ্রয়ণ প্রকল্প
গুচ্ছগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্প (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হলদিবাড়ী গ্রামে সরকারিভাবে গড়ে ওঠা গুচ্ছগ্রামের ঘর বরাদ্দ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে সুবিধা বঞ্চিত কয়েকটি পরিবার, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহসিন আলী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব সরকার এ অভিযোগ করেন। গত ১ মাস ধরে ঘর বরাদ্দের অনিয়মের বিষয়ে একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি তারা।

সুবিধা বঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, যারা এলাকায় ভিক্ষা করে জীবন-যাপন করেন, দুমুঠো খেয়ে রাত্রিযাপনের জায়গা নেই। এমন অসহায় দুস্থদের গুচ্ছগ্রামে ঠাঁই হবার কথা। কিন্তু গুচ্ছগ্রামে এমন কিছু পরিবারকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে যাদের নিজস্ব পাকা ঘর রয়েছে, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, অনেকের জায়গা জমি রয়েছে।

ওই গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত বীরেন চন্দ্র জানান, আমি ও আমার স্ত্রীর থাকার কোনো জায়গা নেই। গুচ্ছগ্রামের ঘর বরাদ্দ পেয়েও গত এক বছর ধরে কেউ থাকেন না। এমন একটি ঘরে আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে অবগত করে আশ্রয় নিলে ঘরের মালিক বহুবার আমাদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট তহসীলদারও চাপ প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

ইউপি সদস্য মহসিন আলী অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সুপারিশে গুচ্ছগ্রামে অনেক স্বাবলম্বীরাই ঘর বরাদ্দ পেয়েছে। অনেকেই ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর ঘরে তালা দিয়ে দখল করে রেখেছে। ১ বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেনি। বিষয়টি তদন্ত করে পুনরায় প্রকৃত অসহায়দের নামে ঘর বরাদ্দে চেয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পরও ঘর বরাদ্দ পাওয়া কয়েকজনের নামের তালিকাসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আমি ও আমার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবেদন করেছি।

অভিযোগে তালিকায় থাকা মোখলেসুর রহমান। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে তার শ্বশুরবাড়িতে সম্পত্তি ও পাকা বাড়ি রয়েছে। তারপরও তিনি ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি জানান, গত তিন বছর ধরে স্ত্রীকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু কোনো আশ্রয় পায়নি। আমার শ্বশুরের সম্পত্তি রয়েছে। কিন্তু আমার তো নেই। শ্বশুর বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা দেয়নি। তাই গুচ্ছগ্রামের ঘর নিয়ে এখানেই স্ত্রীসহ আছি।

সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের তালিকা থাকা বেশ কয়েকজনকে গুচ্ছগ্রামে পাওয়া যায়নি। অন্যান্য সুবিধাভোগীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, দ্বিতীয় ধাপে বরাদ্দ পাওয়া গুচ্ছগ্রামের ঘর তালা লাগিয়েই দখল করেছে কয়েকজন ব্যক্তি। ঘর বরাদ্দ পেলেও কোনো দিন পরিবার নিয়ে ওঠেনি গুচ্ছগ্রামে। আবার কয়েকজন শুধু রাত্রিবেলায় ঘরে থাকেন, শুধু ঘর দখলে রাখার জন্য। সকাল হলেও বাড়িতে গিয়ে কাজ করেন।

ভানোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব সরকার জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের ঘর বরাদ্দ প্রদানের জন্য লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল আলম সুমন মুঠোফোনে জানান, গুচ্ছগ্রামের বিষয়ে দুই পক্ষ দুই ধরনের কথা বলছে। সবাই মৌখিকভাবে অভিযোগ করে গেছে। কেউ লিখিত দেয়নি। লিখিত অভিযোগ না পেলে আমার কিছু করার নেই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড