নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদী সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নে প্রবাসীসহ দুই বন্ধুকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে আল-আমিন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। অপহরণকারী চক্র তাদের কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে। এমনকি তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অপহৃত প্রবাসী মাসুদের বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একই গ্রামের সফুর আলীর ছেলে আল-আমিনের (২৫) বিরুদ্ধে মাধাবদী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, গত ১১ আগস্ট ইরাক প্রবাসী মাসুদ তার বন্ধু হারুনকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়। এ সময় একই এলাকার সফুর মিয়ার ছেলে আল-আমিন তাদের পরিচিত বড় ভাইয়ের দোকান থেকে ভালো মানের পোশাক কিনে দেওয়ার কথা বলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিয়ে কৌশলে অপহরণকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়। তারা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই অপহরণকারী চক্র তাদের সঙ্গে থাকা স্মার্ট ফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
পরে চক্রটি তাদের রূপগঞ্জের একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে প্রচুর মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা তাদের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অন্যথায় তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় কিন্তু তাদের পরিবার মুক্তিপণ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে তারা কৌশল পাল্টিয়ে মেয়েদের সঙ্গে অপহৃতদের অশ্লীল চিত্র ধারণ করে এবং চাঁদা না পেলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এতেও অপহৃতদের পরিবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে প্রবাসী মাসুদ কৌশলে পালিয়ে আসে।
বাড়ি ফিরে বিষয়টি স্বজনদের জানালে তার বন্ধু হারুনকেও ছেড়ে দেয় চক্রটি। এ ঘটনায় আল-আমিন পলাতক রয়েছে বলে জানান অপহৃতদের পরিবার। তবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে একটি মহল।
প্রবাসী মাসুদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আল-আমিনের লক্ষ্য ছিল অনেক ভয়াবহ, তার গ্যাংদের বড় ভাই আনোয়ার নামে এক যুবক ও আল-আমিনসহ ছয়জন এ চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার গ্যাং সদস্যরা আমাদের ব্যাপক মারধরও করে।’
অপহৃত প্রবাসীর বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাসুদ প্রায় ১০ বছর ধরে ইরাকে থাকে। এবার ছুটিতে এসে বিয়ে করেছে। আল-আমিনের লক্ষ্য ছিল আমার ছেলেকে মেরে ফেলার। কিন্তু আল্লাহর রহমতে সে বেঁচে গেছে। এ ঘটনার পরদিনই মাসুদ ইরাকে চলে যায়। বৃদ্ধ বয়সে তিনিও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচারে জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।’
অভিযুক্ত আল-আমিনের বাবা সফুর মিয়া বলেছেন, এ বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মিটমাট করে দিয়েছে। আল-আমিন বাড়িতে থাকে না। চেয়ারম্যান কী মিটমাট করে দিয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি সুর পাল্টে ফেলেন, বলেন তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন ভূঁইয়া রিপন বলেন, ‘ঘটনাটির বিষয়ে মাসুদের বাবা ও হারুনের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক দরবার করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত আল-আমিনকে কোনোভাবেই মজলিশে হাজির করাতে পারেনি তার বাবা সফুর মিয়া। আল-আমিন এখন পলাতক রয়েছে।’
এ বিষয়ে মাধবদী থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড