গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যা ঘটনার মামলায় পিবিআই এর দাখিল করা অভিযোগপত্রের (চার্জশীট) বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। পিটিশনটি আমলে নিয়ে আগামী ৪ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্র শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে, আদালতে মামলার বাদী থমাস হেমরমের পক্ষে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার জেড আই খান পান্না। এ সময় বাদীর পিটিশনের পক্ষে আদালতে অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবুসহ স্থানীয় কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার জেড আই খান পান্না বলেন, নারাজি পিটিশনে পিবিআই এর দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে মনগড়া, পক্ষপাতমূলক, কথিত এবং সর্বোপরি ঘটনাকে আড়াল করা হয়েছে। যথেষ্ট সাক্ষ্য, প্রমাণ, তথ্য-উপাত্ত এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্বেও এজাহার নামীয় মূল আসামিসহ জড়িত কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও মিলের কর্মকর্তা-শ্রমিক নেতাদের চার্জশীটে নাম বাদ রেখে রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে।
এছাড়া চার্জশীটে বাদী পক্ষের লোকজনের নাম এবং জড়িত নয় এমন কয়েকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পিবিআই এর মনগড়া কল্পকাহিনী বর্ণনার মাধ্যমে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের কারণে বাদীসহ ভুক্তভোগীরা অপূরণীয় ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই পুনঃতদন্ত সাপেক্ষে জড়িত আসামিদের অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়ে বাদীর পক্ষে আদালতে পিটিশন দাখিল করা হয়। পিটিশনে আসামিদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ ও যুক্তি উপস্থাপন উল্লেখ করে বিচার বিভাগীয় পুনঃতদন্তও চাওয়া হয়েছে। পিটিশন আমলে নিয়ে আগামী ৪ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক।
এ দিকে আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিলের পর শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ করেন সাঁওতালরা। সেখানে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী ও সাঁওতাল নেতৃবৃন্দরা অংশ নেয়। সমাবেশে বক্তারা পুনঃতদন্ত করে চার্জশীটে প্রকৃত আসামিদের অন্তর্ভুক্তসহ জড়িতদের দৃষ্টান্ত বিচার ও বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরতের দাবি জানান। একই সঙ্গে সাঁওতালদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়। দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৮ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার চার্জশীট দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল হাই সরকার। চার্জশীটে মিলের কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল, ইউপি সদস্য শাহ আলম ও মিলের শ্রমিক-নেতাসহ ৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু চার্জশীট প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ ও পুনঃতদন্তের দাবিতে সভা-সমাবেশ ও সড়ক অবরোধসহ আন্দোলনে নামেন সাঁওতালরা।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড