• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভৈরবের অসহনীয় লোডশেডিং, হাসপাতালের রোগীসহ গ্রাহকরা নাজেহাল

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব

০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৪
লোডশেডিং
(ছবি :সংগৃহীত)

দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। তবে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সেখানে সর্বত্রই অসহনীয় মাত্রায় লোডশেডিং চলছে। সময় অসময়ে এমন দুর্বিসহ লোডশেডিংয়ের কারণে নাজেহাল ভৈরবের হাসপাতালের রোগীসহ অর্ধলক্ষাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক।

স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস বলছে, মাঝে মধ্যে যান্ত্রিক ও কারিগরী ত্রুটির কারণেই এই লোডশেডিং হচ্ছে। আর সাধারণ গ্রাহকদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এই লোডশেডিং থেকে মুক্তি পেতে চান তারা। জানা গেছে, দেশের অন্যতম প্রধান নদীবন্দর ভৈরবে। ফলে অন্য যেকোনো উপজেলার তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি। তাছাড়া সড়ক, রেল ও নৌ-পথের যোগাযোগ সমৃদ্ধ হওয়ায় ভৈরবে অসংখ্য ছোট-বড় কল-কারখানা গড়ে উঠেছে।

এদিকে পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারী, শিশু ও পুরুষ ওয়ার্ডে বেডের তুলনায় নিত্যদিন ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড় অনেক বেশি। তাই সরকারি হাসপাতালটিতে ভাদ্র মাসের গরমও যেনো একটু বেশি। এছাড়াও গেল এক মাস ধরে বিদ্যুতের লোডশেডিং যেনো অসহ্য গরমের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে আরও কয়েকগুণ। ফলে দিনের বেলায় যেমন তেমন রাতের বেলায় লোডশেডিং হলে অসুস্থ নারী ও শিশুসহ শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধ রোগীদের যেন দম বন্ধ হয়ে আসে।

হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ১২ নম্বর বেডে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী আসাদ মিয়া বলেন, গত ২৭আগস্ট মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। সকাল সাড়ে ৮টায় দেখা মেলে। টানা ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে হাসপাতালটি। এতে অসহ্য গরমে রোগীরা ছটফট করতে থাকে।

পাশের বেডে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কামরুল ইসলাম নামে আরেকজন রোগী বলেন, তিনি চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার মতে হাসপাতালের বৈদ্যুতিক পাখাগুলো বেশ পুরনো। তাই বিদ্যুৎ থাকলে কোনো রকম বাতাস পেলেও লোডশেডিং হলে হাত পাখায় একমাত্র ভরসা। হাত পাখায় বাতাস করতে করতে হাত ব্যাথা হলেও দেখা মেলে না বিদ্যুতের। ফলে লোডশেডিংয়ের কারণে নাজেহাল তারা।

নারী ওয়ার্ডে সুফিয়া বেগম নামে এক রোগী বলেন, হাসপাতালে জেনারেটর থাকলে হয়তো কিছুটা হলেও দুর্ভোগ লাঘব হতো।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে হাসপাতালে জরুরি অপারেশনসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের নতুনভাবে করা চণ্ডিবের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ফিডারের অর্ন্তভুক্ত এলাকা চণ্ডিবের, কমলপুর ও গাছতলা ঘাটের গ্রাহকদের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, গ্রীষ্ম মৌসুমের অসহ্য গরম শেষে ভাদ্র মাস এসে অহসনীয় গরম অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু এই সময়ে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াই চলছে অসহনীয় মাত্রায় লোডশেডিং।

একই দাবি শহরের ১২টি ওর্য়াড ও উপজেলার শিমুলকান্দি, আগানগর ও শ্রীনগর ইউনিয়নের হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে লোডশেডিং থেকে মুক্তি পেতে চান তারা। তাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুঠোফোনে ভৈরব বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ৯টি ভাগে অর্থাৎ ৯টি ফিডারের মাধ্যমে ভৈরব বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। একেক সময় একেক ফিডারে কারিগরী ও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে এই লোডশেডিং সৃষ্টি হয়। পরে এসব সমস্যা সমাধান করে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এই লোডশেডিং স্বাভাবিক বলেই মনে করেন তিনি।

তাছাড়া আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি দেশের রাজধানী ঢাকাতেও গ্রাহকরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পায় না বলেও যুক্তি দেখান।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড