আব্দুস সালাম বাবু, বগুড়া
বগুড়ার আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়টির ছয় কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনটিতে ফাটল এবং ছাদের প্লাস্টার খুলে শিক্ষার্থীদের গায়ে ও মাথায় পড়ছে। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরজমিনে বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পুরনো ওই জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে প্রায় ৩২৭ জন শিক্ষার্থী। ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৯৪ সালে একটি নতুন পাকা ভবন নির্মাণ করে। নির্মাণের ২৫ বছর পেরুতেই ছাদের প্লাস্টার খুলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের গায়ে ও মাথায় পড়ছে। ফলে ওই ভবনে সীমাহীন কষ্ট ও আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মিনহাজ ও সৌরভ জানায়, আমরা সব সময় ভয়ে ভয়ে ক্লাস করি। এর আগে বেশ কয়েকবার প্লাস্টার খুলে আমাদের হাতে পড়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) অল্পের জন্য এক সহপাঠীর মাথায় না পড়ে গায়ে পড়ায় সে বেঁচে যায়। শ্রেণিকক্ষের এ অবস্থার জন্য অনেকে ক্লাসে আসতে চায় না।
ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রের অভিভাবক আখতারুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়ে এমন অবস্থায় ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে। কখন ছাদের প্লাস্টার খুলে মাথায় পড়ে, তার ঠিক আছে?
শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টার উঠে গেছে (ছবি: দৈনিক অধিকার)
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা খাতুন বলেন, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে আশপাশের ১৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয় কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে গত কয়েক বছর ধরে কৈকুড়ি বিদ্যালয়ে সাব-সেন্টার করে সাতটি বিদ্যালয়ের পিইসি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে এ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি শ্রেণিতে শাখা করা প্রয়োজন কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যালয়ে জন্য একটি নতুন দ্বিতল অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সুলতান আহম্মেদ জানান, বিদ্যালয় মাঠের উত্তর পাশে চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং দক্ষিণ পাশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট আলাদা ভবন হওয়ায় রোদ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষকদের ক্লাসে যেতে হয়। এছাড়া একদিকে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট অপরদিকে প্লাস্টার খুলে পড়ছে। এতে আমরা মহাবিপাকে পড়েছি। বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান ভালো হলেও বর্তমানে শ্রেণিকক্ষের এমন অবস্থায় পাঠদানে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
আদমদীঘি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সামছুল ইসলাম দেওয়ান জানান, বিষয়টি জানার পর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন সম্পন্ন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠোনো হবে।
ওডি/এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড