• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নওগাঁর বড়খোল উচ্চ বিদ্যালয়ে লোক নিয়োগে অনিয়ম

  নওগাঁ প্রতিনিধি

২৩ আগস্ট ২০১৯, ১২:১৯
বিদ্যালয়
বড়খোল উচ্চ বিদ্যালয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

নওগাঁর রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়নের বড়খোল উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে লোক নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অন্যান্য বৈধ প্রার্থীদের বাদ দিয়ে রাতের আঁধারে সভাপতির ছেলেকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ অন্যান্য প্রার্থী ও গ্রামবাসীদের।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত জুলাই মাসে উপজেলার বড়খোল উচ্চ বিদ্যালয়ে একজন অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে জনবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির ছেলেসহ ওই এলাকার ১০ জন প্রার্থী আবেদন করে। পরবর্তী সময়ে একজনকে বাদ দিয়ে বাকি নয়জনের আবেদনপত্র বৈধ ঘোষণা করেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু এর পরবর্তী সময়ে কবে পরীক্ষা হবে, কোথায় হবে তা সভাপতির ছেলে ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীরা কেউ জানে না। সম্প্রতি অন্য প্রার্থীসহ গ্রামের অন্যান্য মানুষরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে গত ৬ আগস্ট নওগাঁ শহরের কোনো এক স্থানে পরীক্ষার মাধ্যমে ওই পদে সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত ফল প্রদান করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ আগস্ট ওই পদে যোগদান করেন সভাপতির ছেলে। এরপর থেকে গ্রামবাসীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।

গ্রামবাসীরা জানান, কীভাবে এই নিয়োগ প্রদান করা হলো এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। নিয়মানুসারে সাধারণ ও স্বাভাবিকভাবেই নিয়োগ পরীক্ষা ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া বাধ্যতামূলক কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই এই নিয়োগ পরীক্ষা কোথায় হয়েছে তা নিয়োগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া আর কেউ জানেন না।

ওই পদে আবেদনকারী রহিদুল ইসলাম বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তার বলে দেওয়া নিয়মের মধ্যেই অনেক কষ্টে দুইজন প্রক্সি প্রার্থীসহ আবেদন করি। একদিন প্রধান শিক্ষক আমাকে ফোনে বলেন যে এই চাকরির জন্য ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকা লাগবে। তুমি যদি দিতে পারো তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ কর তা না হলে সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক আমাকে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কিত আর কোনো কিছুই জানাননি। এখন শুনতে পাচ্ছি কাকতালীয়ভাবে ওই পদে সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব?

আরেক প্রার্থী আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের টাকা নেই তাই আমাদের কোনো চাকরিও নেই। বেকারত্বই আমাদের প্রধান সম্বল। আমি কোন প্রক্সি প্রার্থী ছাড়াই আবেদন করেছিলাম। আমার আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে নাকি বৈধ করা হয়েছে তা পরবর্তীতে আমাকে আর কিছুই জানায়নি প্রধান শিক্ষক। এখন লোকমুখে শুনতে পাচ্ছি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ওই পদে সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই নিয়োগ বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে অনিচ্ছুক বলে জানান।

দাতা সদস্য ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন প্রামানিক বলেন, আমি এই নিয়োগ সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে প্রধান শিক্ষক কিংবা সভাপতি কিছু জানায়নি।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাজেদুল হক বলেন, আমি এই নিয়োগ সম্পর্কিত কোনো কিছুই জানি না। ঈদের পর বিদ্যালয় চালু হওয়ায় বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারি যে ওই পদে সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ওইদিন (২০ আগস্ট) সভাপতির ছেলে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছে।

প্রধান শিক্ষক জাকির উদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে সভাপতি খুব ভালো বলতে পারবেন। আপনি (সাংবাদিক) দয়া করে সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছেফাত উল্লাহ বলেন, আমি এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারব না। আপনারা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন তাহলে এই বিষয়ে জানতে পারবেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, আমরা নিয়ম অনুসারে ওই পদে নিয়োগ প্রদান করেছি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোবারুল হোসেন বলেন, আমি এই নিয়োগ সম্পর্কে কোনো কিছুই জানি না। আমার কাছে বঞ্চিত প্রার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আমি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড