সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। জেলায় এডিস মশা ও লাভা থাকায় প্রতিদিন প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের মানুষ ডেঙ্গুরোগ আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার বেহালদশা ও পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মশা নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণা না করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল থেকে সিরাজগঞ্জে ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণ শুরু হয়। প্রায় তিন সপ্তাহে জেলায় ৪৬৬জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ১৭ আগস্ট মেহেদী হাসান মীম নামে এক কলেজ ছাত্র সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় স্থানানন্তর করা হয়েছে। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
এদিকে, প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও জেলায় তেমন কোনো প্রতিরোধ কর্মসূচি পালন হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে দু-একটি র্যালি, ব্যানার ও লিফলেটসহ স্কুল কলেজে কয়েকটি সমাবেশের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রতিদিনই ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায় থেকে ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও প্রতিরোধে নেই কোনো তৎপরতা। শুধু সিরাজগঞ্জের পৌরসভাগুলোতে মশক নিধন স্প্রে করা হচ্ছে। তাও প্রতিটি ওয়ার্ডে স্পে করা হচ্ছে না। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালের বাইরে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। এমনকি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য স্যালাইনের সংকটও রয়েছে। সোলায়মান হোসেন নামে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ডেঙ্গু রোগী জানান, হাসপাতালে আসার পরই একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করতে বলা হয়। পরীক্ষার ফলাফলের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রোগীদের অভিযোগ, শুধু একটি করে ট্যাবলেট দেওয়া হয়। এছাড়া স্যালাইন বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালের নার্সরাও চিকিৎসা সেবা দিতে দুর্ব্যবহার করেন। রয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। এ কারণে অনেকে ক্ষোভে হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিস্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। তবে ডেঙ্গুর পরীক্ষার কীট বা ওষুধের সঙ্কট নেই। তবে রোগীরা কেন বাইরে থেকে পরীক্ষা করছে সেটি আমার জানা নেই। সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.জাহিদুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমাজের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি বাড়ি ও আশপাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোথাও যেন গাড়ির টায়ার ও ডাবের খোসায় পানি না জমে সে জন্য সকলকে সর্তক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সবাই সর্তক থাকলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব বলে তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে র্যালি ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকায় মশক নিধনে স্প্রেসহ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড