সহিদুল ইসলাম সহিদ, কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জ সদরসহ ১৩টি উপজেলার কৃষকেরা কমবেশি পাট চাষ করে থাকেন। বিশেষ করে জেলার নিকলী, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, পাকুন্দিয়া, কটিয়াদি, কুলিয়ারচর ও হোসেনপুর উপজেলার কৃষকেরা পাটের চাষ বেশি করেন। এ বছর এসব উপজেলার কৃষকদের সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাছাড়া বাজার দরও ভালো।
ধানের লোকসান পাট দিয়ে কিছুটা হলেও লাঘব হওয়ার আশায় কৃষকরা বেশ খুশি। এ বছর সবাই অল্প পরিমাণ জমিতে পাট চাষাবাদ করলেও দাম বেশি পেয়ে আগামী বছর বেশি পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করার স্বপ্ন বুনছেন এখানকার চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯অর্থ বছর এ জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮১১ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম চাষ হয়েছে। জেলায় এ বছর ১৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে নিকলী, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, পাকুন্দিয়া, কটিয়াদি, কুলিয়ারচর ও হোসেনপুর উপজেলায় কম বেশি পাট চাষ হয়েছে।
এখানকার চাষিরা তোষা, দেশি ও কেনাফ জাতের পাট চাষ করে থাকেন। তন্মেধ্যে বেশির ভাগ চাষিই দেশি ও তোষা জাতের পাট চাষাবাদ করেছেন। এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকা, পাট চাষিদের পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতার ফলে এ বছর পাটের ভাল ফলন হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান বাজারে ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা দরে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। এতে ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় পাট চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলার পোড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. রহমত আলী এ বছর দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকা। দেড় বিঘা জমিতে ১৩ থেকে ১৪ মণ পাট পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। এতে বর্তমান বাজার দরে পাটের আঁশ বিক্রি করে খরচ উঠে আসবে। পাশাপাশি পাটশোলা বিক্রি করেও লাভবান হবেন বলে জানান।
পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত কৃষক (ছবি : দৈনিক অধিকার)
করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা গ্রামের সুরুজ মিয়া বলেন, ৭৫ শতাংশ জমিতে তোষা পাট চাষ করেছি। এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যা করায় পাট গাছগুলো আট থেকে নয় হাত পর্যন্ত লম্বা হয়েছে। এখন পাট কাটার সময় হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবার পাট চাষ করে বেশ লাভবান হব। গত বৎসর একই জমিতে ধান চাষ করে তেমন একটা লাভবান হতে পারিনি। কিন্তু এবার পাট চাষে আমার সেই ঘাটতি পুষিয়ে যাবে।
নিকলী উপজেলার পূর্বকুর্শা গ্রামের কৃষক হেলিম মিয়া বলেন, দুই বিঘা জমিতে কেনাফ জাতের পাট চাষ করেছি। এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর আগে এতে ভালো ফলন পায়নি। তাছাড়া পাটের বাজার দরও ভালো। তাই আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাটের চাষ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতিউর রহমান জানান, যদিও এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাটের চাষাবাদ কিছুটা কম হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া বাজার দর ভালো থাকায় কৃষকেরা আগামী বছরে আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকা ও কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতার ফলে পাটের ফলন ভাল হয়েছে বলে তিনি জানান।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড