পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার হেমায়েতপুরে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পেরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে আশ্রমে রেখে পালিয়েছে তার সঙ্গে থাকা অভিভাবক। গত এক সপ্তাহ ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন এ তরুণী হাসপাতালের পাশে অবস্থিত ঠাকুর অনুকুলচন্দ্রর সৎসঙ্গ আশ্রমে রয়েছে। এ অবস্থায় রোগীকে নিয়ে বিপাকে পড়ে সোমবার (১৯ আগস্ট)সন্ধ্যায় পাবনা সদর থানায় জিডি করেছে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানান, গত ১২ জুন মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে নিয়ে তার মা পরিচয়ে এক নারী আশ্রমে একটু আশ্রয় চান। এ সময় তিনি জানান, তিনি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে এনেছেন। এর এক পর্যায় সুযোগ বুঝে মেয়েটিকে রেখে ওই নারী পালিয়ে যান। জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানসিক রোগী নিয়ে পাবনার বিশেষায়িত হাসপাতালে আসেন অনেকেই। দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেক রোগী সময়মতো এসে পৌঁছাতে না পারলে আশে পাশের আবাসিক হোটেল অথবা নিকটস্থ শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকুলচন্দ্রর আশ্রমে আশ্রয় গ্রহণ করেন। যাদের জন্য কোনো থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে না, শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রম কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। আর এই আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ নিয়ে ওই পরিবারটি তরুণী মানসিক মেয়ে রোগীকে রেখে পালিয়েছে। হেমায়েতপুরের স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, রোগী রেখে চলে যাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম না। তিনি তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, অনেক অভিভাবক তাদের অসুস্থ সন্তানদের কষ্ট করে এই বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। দিনের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বহির্বিভাগ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হ । এরপর সেবা বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালটি এমন একটি জায়গায় অবস্থিত যার আশেপাশে থাকার জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা। ধনী রোগীদের স্বজনরা প্রাইভেট ক্লিনিকে বা হোটেলে ওঠেন। বেশিরভাগ অসহায় মানুষ এই হাসপাতালের আঙ্গিনায় সারারাত রোগী নিয়ে বসে থাকেন চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, অনেকে তাই বাধ্য হয়ে আশ্রমে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দেশের একমাত্র এই বিশেষায়িত হাসপাতালে আসা রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি আবাসন ব্যবস্থা করা দরকার।
এ ব্যাপারে শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার রায় বলেন, আশ্রমে যারা আশ্রয় নেন রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এই রোগী আশ্রয় গ্রহণের পর পরই তার অভিভাবক অন্য রোগীর স্বজদের কাছে ওই তরুণী মানসিক রোগীকে কিছু সময়ের জন্য দেখতে বলেন। তিনি কিছু কাগজ আনার কথা বলে পালিয়ে যান। যে কারণে তার তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তার নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা যায়নি বলে কিনি জানান।
তিনি জানান, সেবাশ্রমে আমরা কাউকে আঘাত করতে পারি না। সেবাই আমাদের ধর্ম, আমাদের আশ্রম। আমাদের সাধ্যমতে আমরা অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করে থাকি। অসহায় পরিবার উপায় অন্তর না পেয়ে হয়তো মেয়েকে রেখে পালিয়েছে। আইনগত ঝামেলা এড়াতে থানায় জিডি করা হয়েছে। আশা করছি, এই পরিবারের সদস্যরা তার সন্তানের জন্য আবার ফিরে আসবেন।
এছাড়া এই মেয়েটির সুচিকিসৎসার জন্য সরকারি বেসরকারি সংস্থা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে বলেও তিনি আশা করেন।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড