• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‌‌‘জান দিব, বালু দিব না’

  টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

১৮ আগস্ট ২০১৯, ১৪:৫৭
মানববন্ধন
বালু উত্তোলন রক্ষার্থে মানববন্ধন (ছবি : দৈনিক অধিকার)

দীর্ঘদিন ধরেই টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে যমুনা নদীতে অবাধে অবৈধ বালু উত্তোলন হচ্ছে। যার ফলে অনেক হত দরিদ্রের বাড়িঘর চলে গেছে যমুনা গর্ভে। তাই নিজেদের সহায়-সম্বল হারিয়ে নিজেদের বাড়িঘর রক্ষা ও বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। ‘জান দিব তবু বালু দিব না’ এই স্লোগানে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মানববন্ধন করেছেন সাত গ্রামের প্রায় তিন সহস্রাধিক মানুষ।

এ নিয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতুর দক্ষিণ-পূর্ব পাশের উপজেলার আলীপুরে দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে তারা। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও কিছু অসাধু ব্যক্তিরা বালু উত্তোলন করেই চলেছে। তারা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

মানববন্ধনে গ্রামবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন- আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম মাষ্টার, শামসুল আলম, প্রমুখ।

বক্তব্যে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর কোল ঘেঁষে যমুনা নদী থেকে দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলন করে আসছে উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার, গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মেম্বারসহ একটি প্রভাবশালী মহল। বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলার চর সিংগুলি, বন সিংগুলি, কায়েম সিংগুলি, জিদহ, ভৈরববাড়ী, আলীপুর, বেলটিয়া, খাগচড়া গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ি-ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে বালু উত্তোলনকারীরা। এর আগে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে বালু উত্তোলনকারীদের কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছে।

শামসুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৬ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ হলেও তোয়াক্কা করে না প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু। এছাড়া উত্তরবঙ্গে গ্যাস সংযোগের লাইনও রয়েছে হুমকিতে। যে কোনো সময় গ্যাস লাইন বিস্ফোরণ হয়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বালু উত্তোলন করে পাহাড়সম মজুদ করা হয়েছে। উপজেলার গড়িলাবাড়ী গ্রামের জনাব আলী তালুকদার নামের কৃষক বলেন, নদীতে আমার বাড়ি সাত থেকে আটবার ভেঙে গেছে। নদী ভাঙন রোধে বালু উত্তোলন বন্ধ ও স্থায়ী ব্যবস্থা চাই।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, সেতু এলাকায় ৬ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরেও একটি প্রভাবশালী মহল বালু উত্তোলন করার চেষ্টা করে। বালু উত্তোলনের প্রভাব পরোক্ষভাবে সেতুর ওপর গিয়ে পড়ে। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক আছি।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। বর্তমানে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড