ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
হাতের মেহেদির রঙ মুছে যাওয়ার আগেই নিভে গেল ইমি আক্তার (১৯) নামে এক নববধূর প্রাণ। সাবেক প্রেমিকের হুমকিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাত ১টার দিকে ঠাকুরগাঁয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ওই নববধূ।
গত তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে ইমির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
জানা যায়, সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে গোপন ভিডিও প্রকাশের হুমকিতে শ্বশুর বাড়ির সংসার ভাঙার ভয়ে আত্মহত্যা করেন এ নববধূ।
নিহত ইমি আক্তার জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের জিল্লুর পাড়া গ্রামের ইমরান আলীর মেয়ে। গেল রমজান মাসে একই উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের স্কুলহাট গ্রামের শহিদুল্লাহ নামে এক যুবকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর তার স্বামী বিদেশ পাড়ি দেওয়ায় তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বশুর বাড়ি তুলে নেওয়া হয়নি। আগামী সেপ্টেম্বরে ইমিকে শ্বশুর বাড়ি তুলে নেওয়ার কথা ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ইমি বাবার বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ইমির মা ও তার পরিবারের লোকজন ঘটনা দেখে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ইমির অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক হাসপাতালে স্থানান্তর করে এবং সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা শেষে ঈদের দিন ইমিকে রংপুর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে তার পরিবার।
পাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জানান, ঈদের দিন রাত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাত ১টার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ইমির চাচা ইব্রাহিম ও তার মা আমেনা বেগমের অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশী মিস্টার আলী নামে এক যুবকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ইমির। বিয়ের পর থেকে প্রতিনিয়ত ইমির সঙ্গে গোপন ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিচ্ছিল সাবেক প্রেমিক। ভিডিওর কথা শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানলে সংসার ভেঙে যাবে এমন ভয়ে ইমি আত্মহত্যা করে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার এসআই খায়রুজ্জামান বলেন, গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর ঘটনা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নববধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আসে। বুধবার দুপুরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন এবং তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মেয়ের মা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
অভিযুক্ত সাবেক প্রেমিক মিস্টার আলী ও তার বাবা রবিউল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন কল ধরেননি তারা।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড