• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উন্নয়ন কাজের মেয়াদ শেষ না হতেই মহাসড়কে ফাটল!

  রাকিব হোসেন আপ্র, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

০৮ আগস্ট ২০১৯, ১৩:০৯
সড়ক
ভেঙে যাওয়া সড়ক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

লক্ষ্মীপুরে আঞ্চলিক আ লীক মহাসড়ক উন্নয়নের দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শতকোটি টাকার এ প্রকল্প দুটির মধ্যে একটির কাজ এখনো চলমান রয়েছে যদিও কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছিল গত মে মাসে। জোড়াতালি দিয়ে অন্য প্রকল্পটির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গর্ত ও একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ এ সড়কে যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ চৌমুহনী-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের জন্য এটাই ভরসা লক্ষ্মীপুরবাসীর। প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্ত এ সড়কে। ফলে সড়কটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। যার কারণে সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার দাবি জানানো হয়। পরে ২০১৭ সালের শেষ দিকে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটিকে ১৮ ফুট থেকে ২৪ ফুটে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সড়কটির দুই পাশে থাকা হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়।

জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের লক্ষ্মীপুর অংশের ৪০ কিলোমিটার উন্নয়নে দুটি প্রকল্পে ১১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে চন্দ্রগঞ্জ এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ইটের পোল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে বরাদ্দ ৬৬ কোটি টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করে রানা বিল্ডার্স ও আবদুল মোমেন জয়েন। অন্য প্রকল্পে ইটের পোল থেকে রায়পুর বর্ডার বাজার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নে ৫৩ কোটি টাকার কাজ করছে রানা বিল্ডার্স, হাসান বিল্ডার্স ও সালেহ আহমদ বাবুল জয়েন। প্রকল্পে উল্লেখিত নিয়মানুযায়ী ৩ ফুট করে দুই পাশে ৬ ফুট মূল সড়ক প্রশস্ত করার পর দুই পাশে আরও ৬ ফুট ফুটপাথ নির্মাণ করার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে যথাযথ মান রক্ষা করে সড়কের ওপর দুই ধাপে ১২০ মিলিমিটার পিচ ঢালাই (লেয়ার) দেয়ার কথা।

অভিযোগ রয়েছে, দুটি প্রকল্পের কাজেই ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। ৬৬ কোটি টাকার প্রকল্পে চন্দ্রগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের কাজ জোড়াতালি দিয়ে শেষ হয়েছে গত মে মাসে কিন্তু এরপর দুই মাস পার না হতেই সড়কটির একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দুই পাশে যথাযথভাবে ফুটপাথ নির্মাণ না করায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। যার ফলে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। সরেজমিনে জেলা মৎস্য অফিসের সামনে ও মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া এলাকা ছাড়াও সড়কটির একাধিক স্থানে ফাটল ও গর্ত দেখা যায়। অন্য প্রকল্পে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইটের পোল থেকে রায়পুর বর্ডার বাজার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। এখানেও একই পরিস্থিতি বলছেন যানবাহন চালক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।

অথচ সড়কটির এই বেহাল দশার কথা নাকি জানেন না জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত। তিনি দৈনিক অধিকারকে বলেন, সড়কে ফাটল ধরা ও গর্ত সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ওয়ার্ক অর্ডারের সময় থেকে পরবর্তী তিন বছর পর্যন্ত ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সড়কের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তারা তা সংস্কার করে দিতে বাধ্য।

সওজের এই কর্মকর্তা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে আরও বলেন, ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে রায়পুর অংশের প্রকল্পটির মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে অন্য প্রকল্পটিরও কিছু কাজ থেমে আছে। বর্ষার পরেই কাজ ধরা হবে।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড