• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লাখো বানভাসি মানুষ

  ফরিদ মিয়া, টাঙ্গাইল

২৩ জুলাই ২০১৯, ১৭:৪১
বানভাসি
জেলায় প্রায় তিন লাখ মানুষ বানভাসি (ছবি- দৈনিক অধিকার)

টাঙ্গাইলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় তিন লাখ বানভাসি মানুষ। যদিও সরকারি দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে পর্যাপ্ত ঔষধ ও খাবার স্যালাইন রয়েছে বানভাসি মানুষের জন্য কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অন্য চিত্র। কেবল ইউনিয়ন পরিষদে নাম মাত্র মেডিকেল ক্যাম্প করে দায় সারছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস। দুর্গম চরাঞ্চলে কোনো ধরনের মেডিকেল সহায়তা বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের কোনো সরবরাহ নেই। জেলায় নেই সাপে কাটা রোগীর ভ্যাকসিন।

হুগড়া ইউনিয়নের চর হুগড়া গ্রামের হাফেজা বেগম জানান, টিউবওয়েলের অর্ধেক বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানি ফুটিয়ে খাওয়ার অবস্থাও নেই। কোথায় একটু শুকনো জায়গাও নেই। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিচ্ছে না কেউ। কোথায় গেলে পাওয়া যাবে তাও জানি না। ফলে এই টিউবওয়েলের পানি খাচ্ছি।

কাকুয়া ইউনিয়নের ওমরপুরের পল্লী চিকিৎস ডা: জহিরুল জানান, প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ জন ডায়রিয়া রুগীকে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সরকারিভাবে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যবলেট সরবরাহ করা হলে এই পরিস্থিতি হতো না। কেবল বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

বানের জলেই জীবন। আছে বিশুদ্ধ পানির সংকট (ছবি- দৈনিক অধিকার)

হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্ঝল হোসেন খান তোফা বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো ধরনের পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বা খাবার স্যালাইন আসেনি। আমার ইউনিয়ন অত্যন্ত দূর্গম চরাঞ্চল। সেখানেই এমনিতেই খাবার পানির অভাব রয়েছে। এই বন্যার সময় অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কিছু পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যবলেট পেলে ভালো হতো।

কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, তার ইউনিয়নের ২৯ হাজার লোকের জন্য পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বরাদ্দ পেয়েছেন মাত্র ৫শ পিস। এ ছাড়া খাবার স্যালাইন মেলেনি এক প্যাকেটও।

জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি আব্দুর রউফ জানান, আমরা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিচ্ছি না। যেখানে সম্ভব আমরা বিশেষ পদ্ধতিতে কয়েক হাজার লিটার পানি একবারে বিশুদ্ধ করে দিচ্ছি। ইতোমধ্যে ভুঞাপুরের গোবিনদাসী. গাবসারা ইউনিয়ন ও কালিহাতীতে কয়েক হাজার লিটার পানি বিশুদ্ধকরণ করা হয়েছে। তবে আমাদের কাছে সাপে কাটা রোগীর কোনো ভ্যাকসিন নেই। ঢাকা থেকে আমাদের মেডিকেল টিম আসবে। তখন টাঙ্গাইল রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করবে।

বন্যা কবলিতদের দুর্ভোগ চরমে (ছবি- দৈনিক অধিকার)

সিভিল সার্জন ডা: শরীফ হোসেন খান জানান, টাঙ্গাইলে সাপে কাটা রোগীর জন্য ভ্যাকসিন নেই। ইতোমধ্যে জেলার নাগরপুরে একজনকে সাপে কেটেছিল। তবে তিনি বেঁচে আছেন। তবে পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন মজুত আছে। বন্যায় আত্রান্ত উপজেলা প্রতি ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ২০ হাজার খাবার স্যালাইন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিম কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে বন্যা দুর্গতদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হবে না।

উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে- টাঙ্গাইলের ৬টি উপজেলা, ২টি পৌর সভা, ২৪টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৫ শত পরিবারের প্রায় তিন লাখ মানুষ বন্যা কবলিত। টাঙ্গাইল সদরের চরাঞ্চলে ৪টি ইউনিয়ন ও ভুঞাপুর ও নাগরপুর উপজেলা বিশেষভাবে বন্যা কবলিত। এ ছাড়া প্রায় ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি বন্যা কবলিত হয়েছে।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড