• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

১৮ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি রাঙ্গামাটির এই কলেজ!

  রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

২০ জুলাই ২০১৯, ১১:০২
কলেজ ভবন
রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া কলেজ ভবন ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

দীর্ঘ দেড় যুগ পরও এমপিওভুক্ত করা হয়নি রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া কলেজটি। ফলে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা এ দেড় যুগেরও বেশি সময় বেতন-ভাতা ছাড়া মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চলতি বছর নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার ঘাগড়া কলেজে একজন ইংরেজি, একজন সমাজ বিজ্ঞান ও একজন পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক নিয়োগ দেয়। তাদেরও কোনো বেতন ভাতা নেই।

২০০১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রয়াত কল্পরঞ্জন চাকমার প্রচেষ্টায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা করে কলেজটি। কিন্তু কল্পরঞ্জনের মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পর আর কোনো সরকারই ফিরে তাকায়নি কলেজটির দিকে।

২০০৪ সালে কলেজটি একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করলেও হয়নি এমপিওভুক্তি। ফলে মানবেতর জীবন যাপনের পথ দীর্ঘ হয় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের। এ অবস্থায় অনেকে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

কলেজ সূত্র জানায়, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের নিয়মিত অনিয়মিত মিলে বর্তমানে ছাত্রছাত্রী রয়েছে প্রায় পাঁচশ জন। শিক্ষক রয়েছেন ১৫ জন। কর্মচারী রয়েছে ১০ জন।

বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা শিল্পী চাকমা বলেন, খুব কষ্ট হয়। আশায় আশায় এত বছর ধরে শিক্ষকতা করে যাচ্ছি কিন্তু প্রাপ্তির খাতা শূন্য। ইসলামী ইতিহাস সংস্কৃতি শিক্ষক চায়না চাকমা বলেন, মাঝে মাঝে খুব হতাশা কাজ করে। কলেজের ছেলে মেয়েদের মুখ দেখে অনেকটা দায় নিতে কলেজটিতে পড়ে আছি। এত বড় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনে হয় যেন অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়। এমপিও হলে আমাদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরবে। সে আশায় দিন পার করছি। শিক্ষকদের সমস্যাগুলো প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর।

মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী টুম্পা চাকমা বলেন, স্যারদের মনে আনন্দ দেখলে ভালো লাগে। আমরা জানি, স্যারেরা বেতন ছাড়াই শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। কিন্তু এভাবে কতদিন? তারা যদি সরকারি কিছু সুবিধা পান তাতে আমাদেরও উপকার হবে। গাড়ি ভাড়ার অভাবে অনেক স্যার কলেজে আসতে পারেন না এমনও তথ্য আমাদের কানে আসে।

মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আসাদুল ইসলাম বলেন, কলেজটি এমপিও না হওয়ায় আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। জাতীয় মহিলা দলের ফুটবলার মনিকা চাকমাও আমাদের কলেজের ছাত্রী।

কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামল মিত্র চাকমা বলেন, তৎকালীন প্রথম পার্বত্যমন্ত্রী কল্পরঞ্জন চাকমা অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকে কলেজের দায়িত্ব নিয়ে ছিলাম। অনেক স্বপ্ন দেখেছি। ২০২২ সালে অবসরে চলে যাব। আমরা দীর্ঘ বছর ধরে কলেজটি এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে যাচ্ছি কিন্তু দুর্ভাগ্য, হয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছি। কলেজের অবকাঠামো স্বয়ংসম্পূর্ণ। এমিপও হলে কলেজে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরবে।

এমপিওভুক্তি না হওয়ায় ভালো শিক্ষকদের রাখা সম্ভব হচ্ছে না। যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেতন ভাতা না পাওয়ায় তারাও ক্লাস নিতে আসেন না। চাপ দিতে পারি না। যেন সবার মাঝে হতাশা কাজ করছে। সবকিছু মিলিয়ে ঝিমিয়ে পড়ার অবস্থা। এ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় এমপিওভুক্তি করা। প্রধানমন্ত্রী সদয় হলে কলেজটি এমপিওভুক্ত হবে। দুর্গম এলাকার অনেক ছেলে মেয়ে পড়াশুনার সুযোগ পাবে।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড