সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের হার্ট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বর্তমানে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে যমুনা নদীর কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ মিটার উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৩.৫৫ মিটার রেকর্ড করা হয়। যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত চার দিনে পানি বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৩০, ৩১, ৩৩ ও ৪০ সেন্টিমিটার। এতে তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর (ছবি : দৈনিক অধিকার)
প্রতিদিন বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। মাথা গোজার মতো এক টুকরো জমি না থাকায় ভাঙন কবলিতরা খোলা আকাশ ও অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন কেউ তাদের খোঁজ নিচ্ছে না। ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন সামান্য সহযোগিতাও করছে না।
সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর, এনায়েতপুরের ব্রাম্মনগাতী আড়কান্দি, হাট পাচিল এবং কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, বাঐখোলা ও পাটাগ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী গর্ভে চলে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষ। এছাড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। অনেকে বাড়ি ঘর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে বাঁধের পাশে আশ্রয় নিচ্ছেন বন্যা কবলিতরা। বেশ কয়েকটি উপজেলার বাসিন্দারা বন্যা আতঙ্কে ভুগছেন।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মসজিদ (ছবি : দৈনিক অধিকার)
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ভুইয়া ও মেছড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, দ্রুতগতিতে যমুনার পানি বাড়ছে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বসতবাড়িতে পানি উঠতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মেছড়া ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
খুকনী ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চান জানান, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এনায়েতপুর ব্রাহ্মণগাঁতী, আড়কান্দি ও হাটপাচিল নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধির তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ট পয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ৩৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পানি।
তিনি আরও বলেন, বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে যমুনা নদীর উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আরও তিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড